ভারতে করোনা লাগামছাড়া, ফের দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ
ভারতে দৈনিক কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছেই। গত তিন দিনে সেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৯৭ হাজার ৫৭০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে; যা এযাবৎকালে ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শনিবারের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানোনো হয়েছে, ভারতে এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে মহামারি করোনা। ভারতের চেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে। করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ লাখেরও বেশি।
ভারতে শুধু সংক্রমণ নয় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে মহামারি কোভিড-১৯ দেশটির ৭৭ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিল। তবে বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় ভারতে করোনায় মৃত্যুহার কিছুটা কম।
বিশ্বের যে কোনো দেশ কিংবা অঞ্চলের চেয়ে ভারতে অনেক দ্রুত গতিতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া শঙ্কার কথা হলো ভারতে শুধু নগর ও শহর অঞ্চলে আটকেই নেই ভাইরাসটির ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ, গ্রামাঞ্চলেও তা দ্রুত বিস্তার ছড়াচ্ছে। অথচ এমন পরিস্থিতিতেও সেখানে বিধিনিষেধগুলো শিথিল হচ্ছে।
ভারতে করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যন্ত মহারাষ্ট্র। শুক্রবার ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায়। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম কোনো প্রদেশ কিংবা রাজ্য হিসেবে মহারাষ্ট্র ১০ লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্তের মতো দুঃখজনক এই মাইলফলক তৈরি করে।
যদি ভারতের সবচেয়ে ধনী অঞ্চল মহারাষ্ট্র রাজ্য না হয়ে দেশ হতো তাহলে করোনায় শীর্ষ আক্রান্ত দেশের তালিকায় রাশিয়াকে টেক্কা দিত। কারণ মহারাষ্ট্রের অল্প কিছু বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে গোটা রাশিয়ায়।
সরকারি কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতি পুনরায় সচল করার জন্য বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, স্থানীয় নানা উৎসব ও পূজা আয়োজনের অনুমতি ছাড়াও লকডাউন বিধিনিষেধ আর স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের অনীহার কারণে মহারাষ্ট্রসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অবাধ্যগতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োস্ট্যাটিস্টিকস ও এপিডেমিওলোজি বিভাগের অধ্যাপক ভ্রমণ মুখার্জি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘ভারতে মহামারি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমি খুবই হতাশ। প্রতি সপ্তাহে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। কিন্তু দেশের বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠী এই সংকটকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না।’
এসএ/এমকেএইচ