করোনাকালে এশিয়ার ‘শাইনিং স্টার’ ভিয়েতনামের অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০১ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২০

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধুঁকছে, তখন এশিয়ার আকাশে জ্বলজ্বলে তারা হয়ে দেখা দিয়েছে ভিয়েতনাম। ইতোমধ্যেই দেশীয় অর্থনীতির ওপর মহামারির আঘাত অনেকটাই সামলে নিয়েছে তারা। চলতি বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ভিয়েতনামে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সবশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, এ বছর ভিয়েতনামে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে ২০২১ সালেই তা একলাফে পৌঁছাতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে।

দেশটির এমন সাফল্যের জন্য করোনা নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ দক্ষতা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে (আইএমএফ)।

মহামারির শুরুর প্রায় ১১ মাস হয়ে গেলেও ভিয়েতনামে এপর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ২৮৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৫ জন।

অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য খাতে অবকাঠামোগত সুবিধা অনেক কম থাকা সত্ত্বেও দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মহামারি প্রতিরোধ করেছে তারা। দেশটি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে টেস্টিং কিট উদ্ভাবন, কার্যকর পরিকল্পনার মাধ্যমে গণহারে নমুনা পরীক্ষা এবং বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে মহামারির লাগাম টেনে ধরেছে।

jagonews24

যদিও এই সময়ে দেশটির উদীয়মান পর্যটন খাতে শক্ত আঘাত লেগেছে। তবে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠিকই প্রতিরোধ করেছে তারা।

বাড়িতে বসে কাজ
মহামারিকালে বিশ্বের অগণিত মানুষ ঘরে বসে কাজ করার পথ বেছে নেয়াই ভিয়েতনামের অর্থনীতি বেঁচে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ মাইকেল কোকালারি।

ভিয়েতনামভিত্তিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ভিনাক্যাপিটালের প্রধান এ অর্থনীতিবিদ বলেন, মানুষ ঘরে বসে বেশি সময় কাজ করার জন্য নতুন ল্যাপটপ অথবা অফিস আসবাবপত্র কিনেছে। এগুলোর অনেক পণ্যই ভিয়েতনামে তৈরি হয়।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ভিয়েতনামের রপ্তানি বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এসময়ে তাদের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে আরও বেশি, প্রায় ২৬ শতাংশ।

বাণিজ্যযুদ্ধ
চীনে শ্রমের পেছনে ব্যয় অর্থাৎ মজুরি বেড়ে যাওয়ায় গত এক দশকে ভিয়েতনামের প্রস্তুতকারক খাত বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক হারে। আর চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেও অনেক ব্যবসায়ী চীন থেকে বেরিয়ে যেতে আগ্রহী হয়েছেন।

jagonews24

ইতোমধ্যেই অ্যাপল-স্যামসাংয়ের মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভিয়েতনামে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। সেখানেই এয়ারপড হেডফোন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাপলের।

মাইকেল কোকালারি বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামে পণ্য উপাদনে উৎসাহিত হয়েছে। কারণ, তাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য দরকার।

তিনি বলেন, ভেবেছিলেন আপনার বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু যখন করোনা এলো, দেখা গেল- শুধু চীনা সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে, আর আপনি উৎপাদন করতে পারছেন না।

এ অর্থনীতিবিদের মতে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে এখনই সংকটের সমাধান জরুরি।

সূত্র: বিবিসি

কেএএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।