করোনায় আক্রান্ত এসওয়াতিনির প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু
করোনায় আক্রান্ত হয়ে আফ্রিকার দেশ এসওয়াতিনির প্রধানমন্ত্রী অ্যামব্রুস দলামিনির মৃত্যু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। চার সপ্তাহ আগে তার দেহে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার একটি হাসপাতালে রোববার বিকেলে অ্যামব্রুস দলামিনির (৫২) মৃত্যু হয়েছে। সেখানে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। যদিও দলামিনি বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
তিনি ২০১৮ সালে এসওয়াতিনির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আফ্রিকার ছোট্ট দেশ এসওয়াতিনি এক সময় সোয়াজিল্যান্ড হিসেবে পরিচিত ছিল। দেশটিতে জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
এসওয়াতিনির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৭৬৮। এর মধ্যে মারা গেছে ১২৭ জন। গত ১৬ নভেম্বর দলামিনির দেহে পরীক্ষা-পরীক্ষার পর তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
সে সময় তিনি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, তার দেহে করোনার কোনো উপসর্গ ধরা পড়েনি এবং তিনি ভালো অনুভব করছেন। এর কয়েক সপ্তাহ পরে গত ১ ডিসেম্বর এসওয়াতিনি সরকার এক ঘোষণায় জানায় যে, দলামিনিকে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু রোববার বিকেলে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন তিনি। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় চিকিৎসাসেবার আওতাধীন থাকা অবস্থায়ই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এক বিবৃতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী থেমবা মাসুকু বলেন, সরকার এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে পরবর্তী বিষয়গুলো জনসাধারণকে জানানো হবে। শুধু দলামিনিই নন, এর আগে বিশ্বের আরও কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনায় আক্রান্ত হলেও তারা চিকিৎসা গ্রহণের পর এখন সুস্থ আছেন।
এসওয়াতিনিতে সরকার প্রধানদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। রাষ্ট্র পরিচালনার মূল চালিকাশক্তি এখনও দেশটির রাজপরিবারের ওপরই ন্যাস্ত। সব মন্ত্রী নিয়োগ এবং পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ এখনও রাজার হাতেই। সাবেক ব্যাংকার দলামিনিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন রাজা তৃতীয় মাওয়াতি। ১৯৮৬ সালে সিংহাসনে বসেন রাজা তৃতীয় মাওয়াতি। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৯৮৬ বছর।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বিশ্ব ব্যাংকের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সেখানে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করা মানুষের সংখ্যা ছিল ৩৯ শতাংশের বেশি।
টিটিএন/জেআইএম