চীন যাওয়ার পথে করোনা পজিটিভ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ প্রতিনিধি
করোনা ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে তদন্ত করতে সম্প্রতি চীনে পৌঁছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি দল। কিন্তু ওই দলটির সাথে সংস্থার দুই সদস্য চীন সফরে যেতে পারেনি। তাদের দেহে আইজিএম এন্টিবডি পজিটিভ আসায় তারা চীন সফরের অনুমতি পাননি। আইজিএম অ্যান্টিবডি হচ্ছে করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক সম্ভাব্য লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি। অর্থাৎ তাদের দেহে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
১৩ জন বিজ্ঞানীর একটি দলের চীনে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ১৩ জন দেশটিতে পৌঁছেছে। ১৫ জনের সবাই নিজ নিজ দেশ ত্যাগের আগে করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। পরীক্ষায় সবার করোনা নেগেটিভ আসায় তারা চীনের উদ্দেশে রওনা দেন। চীনে পৌঁছানোর আগে তারা সিঙ্গাপুরে বিরতি নেন। সেখানে আবারও তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
নিউক্লেইক এসিড টেস্টে সবার ফলাফলই নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু দুই সদস্যের করোনাভাইরাস এন্টিবডি পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে বলে জেনেভাভিত্তিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক টুইট বার্তায় নিশ্চিত করেছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ওই দুই সদস্যের পুনরায় আইজিএম এবং আইজিজি এন্টিবডি পরীক্ষা করা হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। বৃহস্পতিবার ওই শহরেই যাওয়ার কথা ছিল ওই দলটির। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে দুই সদস্যকে সিঙ্গাপুরেই থেকে যেতে হয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বর থেকেই চীন সফরের ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে। চীনে প্রবেশ করার আগে তাদের অবশ্যই আইজিএম এন্ডিবডি এবং পিসিআর টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ দেখাতে হয়। সবকিছু ঠিক থাকলেই ভ্রমণকারীদের চীন সফরের অনুমতি দেওয়া হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, চীন সফরের আগে বিজ্ঞানীদের ওই দলটি কয়েক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছেন এবং প্রতিবারই পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। অপরদিকে যারা ইতোমধ্যেই চীনে প্রবেশ করেছেন তারা আরও দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থেকে পরবর্তীতে কাজ শুরু করতে পারবেন।
প্রথম থেকেই এই বিশেষজ্ঞ দলটিকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দিতে বেশ গড়িমসি করেছে চীন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিজিটিন এর ফুটেজে দেখা যায় সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ দলটি পিপিই পরিহিত অবস্থায় উহানে পৌঁছে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।
তারা এমন এক সময় চীনে পৌঁছালেন যখন দেশটির দুই কোটিরও বেশি মানুষ লকডাউনে রয়েছে এবং একটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গত সাত মাস ধরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর সম্প্রতি সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান পিটার বেন এমবারেক জানান, চীনের অভিবাসন নিয়ম অনুযায়ী তারা আগে একটি হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তিনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পর আমরা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব এবং বিভিন্ন জায়গায় যাব।’
করোনার উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিক কী ঘটেছিল তা পুরোপুরি বুঝতে বেশ দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। আমার মনে হয়না প্রাথমিক মিশনেই আমরা পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে পারব, তবে আমরা কাজে লেগে থাকব।’
টিটিএন/জেআইএম