জার্মানিতে বাড়ল লকডাউন, কমল বিধিনিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ০৪ মার্চ ২০২১
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আরোপিত লকডাউন ধীরে ধীরে তুলে নেয়ার ব্যবস্থা করছে জার্মানি। এ লক্ষ্যে পাঁচটি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল।

বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, জার্মানিতে চলমান লকডাউন ২৮ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে ছাড় দেয়া হয়েছে বেশকিছু বিধিনিষেধে।

মেরকেল জানিয়েছেন, পাঁচটি পদক্ষেপে ধীরে ধীরে লকডাউন তোলার ব্যবস্থা করা হবে। তবে এতে গিয়ে যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, তাহলে ফের সেই অঞ্চলে কড়া লকডাউন দেয়া হবে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন প্রদানে আরও গতি আনা হবে।

বুধবার জার্মানির ১৬টি রাজ্যের প্রধানদের সঙ্গে টানা প্রায় ৯ ঘণ্টা বৈঠকের পর লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান দেশটির চ্যান্সেলর।

মেরকেলের ঘোষণা

জার্মান চ্যান্সেলর জানান, জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে পাঁচটি পদক্ষেপের মাধ্যমে লকডাউন শিথিল করা হবে। প্রতি ১৪ দিনে এই পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। তবে সংক্রমণ না কমলে এ পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে না।

লকডাউন শিথিল করার পরে পর পর তিন দিন যদি সংক্রমণ একশর বেশি হয়, তাহলে ফের কড়া লকডাউন ফিরিয়ে আনা হবে। আগামী ৮ মার্চ থেকে জার্মানির সব নাগরিক সপ্তাহে একবার বিনামূল্যে র‍্যাপিড টেস্ট করাতে পারবেন।

এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সবাইকে দেয়া হচ্ছে না। ৬৫ বছরের নীচে যাদের বয়স, তারাই এই ভ্যাকসিন পাচ্ছেন। একটি স্বাধীন কমিটি তৈরি করা হয়েছে, যারা এই নিয়ম বদলানো যায় কি-না, তা খতিয়ে দেখবে। তাদের গ্রিন সিগন্যাল মিললে সবাইকেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

ঘোষিত পাঁচ পদক্ষেপ

- স্কুল এবং ডে কেয়ার খুলে দেয়া হচ্ছে। সেলুনগুলোও কাজ শুরু করতে পারবেন। গত ১ মার্চ থেকেই এই নিয়ম চালু হয়ে গেছে। স্কুল এবং ডে কেয়ার খুলে গেছে।

- আগামী ৮ মার্চ থেকে বই এবং ফুলের দোকান খোলা যাবে। তবে ১০ স্কয়ার মিটারের ব্যবধানে ক্রেতাদের থাকতে হবে। কঠোরভাবে এই নিয়ম পালন করতে হবে। মাসাজ পার্লারও খুলে দেয়া হবে ৮ মার্চ থেকে। তবে কর্মীদের করোনার পরীক্ষা করাতে হবে। নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলেই তারা কাজ শুরু করতে পারবেন।

- সংক্রমণ প্রতি এক লাখে ৫০-এর মধ্যে থাকলে ৮ মার্চ থেকে জাদুঘর, চিড়িয়াখানার মতো জায়গা খুলে দেয়া হবে। খোলা হবে রিটেল স্টোরও। কিন্তু ১০ স্কয়ার মিটারের ব্যবধান মানতে হবে। ১০ জন পর্যন্ত বাইরে খেলাধুলো করতে পারবেন।

- এই নিয়ম চালু হওয়ার পরে যদি সংক্রমণ বাড়তে থাকে, তখন প্রতিটি নিয়মই বদলে ফেলা হবে। জাদুঘর, চিড়িয়াখানায় প্রি-বুকিং করে ঢোকা যাবে। অন্তত ৪০ স্কয়ার মিটারের ব্যবধান মানতে হবে। পাঁচজন একসঙ্গে বাইরে খেলতে পারবেন।

- আগামী ২২ মার্চ থেকে চতুর্থ পদক্ষেপ নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০-এর নিচে থাকলে থিয়েটার, আউটডোর রেস্তোরাঁ, অপেরা হাউসের মতো জায়গা খুলে দেয়া হবে। কনট্যাক্টলেস ইনডোর এবং আউটডোর খেলায় কোনো বিধি-নিষেধ থাকবে না। কিন্তু সংক্রমণ বেড়ে ৫০ থেকে একশর মধ্যে হলে এই সব কিছুই প্রি-বুকিংয়ের মাধ্যমে করতে হবে।

- ৫ এপ্রিল থেকে পঞ্চম পদক্ষেপ নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০-এর নিচে থাকলে ৫০ জন এক জায়গায় জড়ো হতে পারবেন। খেলাধুলার ওপর থেকে সমস্ত নিষেধ তুলে নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০ থেকে একশর মধ্যে থাকলে সব দোকান খোলা যাবে। তবে ১০ স্কয়ার মিটারের দূরত্ব মানতে হবে।

- একই সঙ্গে টিকাদানেও গতি আনা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে টেস্টের সংখ্যা। দিনে দুই লাখ টেস্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের শুরুতে জার্মানির সব চিকিৎসক যাতে টিকা নিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন যাতে সবাই নিতে পারেন, সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।

এসএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।