ভারতে নতুন ধরন ডেল্টা প্লাস শনাক্ত, ৩ রাজ্যে সতর্কতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৪৬ এএম, ২৩ জুন ২০২১

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় ঢেউ এত ভয়াবহ হওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেছেন ভারতীয় ধরন নামে পরিচিত ‘ডেল্টা’ ভ্যারিয়েন্টকে। তবে এই ঢেউয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়ে হাজির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ডেল্টা প্লাস’। ইতোমধ্যেই ভারতের তিন রাজ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি। এর ফলে রাজ্য তিনটিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

মূল করোনাভাইরাসের থেকে চরিত্র বদল করা ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টটি সংক্রমণ ক্ষমতার দিক থেকে প্রবল শক্তিশালী। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, একবার এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়াতে শুরু করলে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে।

ভারতে এখন পর্যন্ত তিনটি রাজ্যে ২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই ভ্যারিয়েন্টে। আশঙ্কার বিষয় হল, এত দিন যে পদ্ধতিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হয়ে এসেছে, ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে তা কাজ করছে না। তাই ডেল্টা প্লাসের সংক্রমণ শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়েও বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এর প্রধান রণদীপ গুলেরিয়াসহ একাধিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, যে ভাবে লকডাউন উঠতেই করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধকে অগ্রাহ্য করে লোকজন রাস্তায় নেমে পড়েছে, তাতে তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী এবং আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তা ভারতে আছড়ে পড়বে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারকে তৈরি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

ডেল্টা প্লাসকে শুরুতেই রুখতে বুধবার মহারাষ্ট্র, কেরল ও মধ্যপ্রদেশকে সতর্ক করে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি ও জলগাঁও, কেরলের পলক্কড় ও পঠানামথিট্টা এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপাল ও শিবপুরী জেলার করোনা আক্রান্তদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ২২ জনের শরীরে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তিন রাজ্যকে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রবল সংক্রামক ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট ফুসফুসের কোষকে আরও দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে থাকে। ফলে ফুসফুসের ক্ষতি হয় বেশি। এছাড়া এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভীষণ ভাবে কমে যায়। সে কারণে যে এলাকাগুলোতে ডেল্টা প্লাসের নমুনা পাওয়া গেছে, সেখানে নজরদারি কয়েক গুণ বাড়ানো দরকার।

নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট আগামী দিনে কীভাবে চরিত্র বদল করবে, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কারোর তেমন ধারণা নেই। ভারতে ব্যবহৃত মূল দুটি ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকরী হলেও ডেল্টা প্লাসের বিরুদ্ধে সেগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনও কিছুই জানাতে পারেননি দেশটির স্বাস্থ্যকর্তারা।

এমকে/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।