টিকা না নেয়ায় টেক্সাসে অর্ধশতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী চাকরিচ্যুত
করোনাভাইরাসের টিকা না নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন মেথোডিস্ট হাসপাতালের অর্ধশতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। খবর এএফপির।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছিল যে ৭ জুনের মধ্যে করোনা টিকা না নিলে তাদের দুই সপ্তাহের জন্য চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।
হিউস্টন মেথোডিস্ট হাসপাতালের মুখপাত্র গেইল স্মিথ বলেন, ১৫৩ জন কর্মী ‘দুই সপ্তাহের চাকরিচ্যুতির সময়ে পদত্যাগ করেছেন অথবা তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে’।
তিনি জানান, কাজ থেকে অব্যাহতিকালীন যে সব কর্মচারী টিকা নেয়ার নির্দেশ মেনেছিলেন তারা আবার কাজে ফিরে এসেছেন।
প্রায় ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। চাকরিচ্যুতরা টিকা নেয়ার বাধ্যতামূলক নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
গত মাসে ওই হাসপাতালের ১১৭ জন কর্মী একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তারা অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘চাকরি চালিয়ে যাওয়ার শর্ত হিসেবে তাদের কর্মীদের জোর করে মানব গিনিপিগ বানাচ্ছে।’
আদালত তাদের এই মামলা খারিজ করে দেয়। আদালত জানায়, টিকার নিরাপত্তা কোনও ইস্যু নয়। টেক্সাসের আইনে শুধুমাত্র কর্মীদের অপরাধে বাধ্য করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিচারক লিন হিউ হিউস বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন নেয়া কোনও অবৈধ কাজ নয় এবং এতে কোনও অপরাধমূলক দণ্ডও পেতে হয়না।’
মামলায় হাসপাতালের নার্স জেনিফার ব্রিজেস অভিযোগ করেন, চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখিয়ে টিকা নেয়ানো হলো ‘হলোকাস্টের সময় জোর করে মেডিক্যাল পরীক্ষা করার মতো।’
নার্সের এই কথায় তিরস্কার জানিয়ে বিচারক বলেন, ‘ইনজেকশন নিতে বলার সঙ্গে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের পরীক্ষার তুলনা করা নিন্দনীয়।’
চাকরি হারানোদের মধ্যে ব্রিজেসও রয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাদের আইনি পদক্ষেপ আরও সমর্থন পাচ্ছে।
হিউস্টনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল কমপ্লেক্স ‘টেক্সাস মেডিক্যাল সেন্টার’ অবস্থিত। এটি হাসপাতাল ও গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিপূর্ণ একটি বিস্তৃত শহর। এই মেডিক্যাল সেন্টারে ১ লাখ ৬ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করেন। প্রতিবছর এক কোটির বেশি রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নেন।
মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫.৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছে। তবে সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন এড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে সবার আগে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাই।
এমকে/এমকেএইচ