কোয়ারেন্টাইনে যেতে হচ্ছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে
করোনা আক্রান্ত ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের সংস্পর্শে আসায় কোয়ারেন্টাইনে যেতে হচ্ছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও চ্যান্সেলর ঋষি সুনাককে। শনিবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। তার একদিন আগে শুক্রবার থেকে কিছুটা অসুস্থবোধ করেন তিনি। অসুস্থবোধের কয়েক ঘণ্টা আগে জাভিদ বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও চ্যান্সেলর ঋষি সুনাকসহ দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে। তারপর প্রশ্ন উঠেছে, ব্রিটিশ নিয়ম অনুযায়ী বরিস ও সুনাককে কোয়ারেন্টিন করতে হবে। কিন্তু শারীরিকভাবে সুস্থ দাবি করে তারা কেউই কোয়ারেন্টিনে যেতে রাজি ছিলেন না। তাদের দাবি, বড় ধরনের বৈঠক হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তারা।
পরে এ নিয়ে পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। দেশটির বিরোধী দলগুলোও বলছে যে এক দেশে দুটি নিয়ম থাকতে পারে না। আইন সবার জন্যই সমান। করোনা আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসলে যে আইনে সাধারণ মানুষদের কোয়ারেন্টিন করতে হচ্ছে, সে আইনে প্রধানমন্ত্রীকেও কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।
অবশ্য করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে কোয়ারেন্টানে আছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। তিনি বলেন, করোনায় খুব সামান্যই অসুস্থবোধ করছেন তিনি। কারণ তিনি ইতোমধ্যেই করোনা ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন।
সম্প্রতি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কঠোর নিয়মনীতি তুলে দেওয়ায় যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। এসবের মধ্যে খোদ যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীই আক্রান্ত হলেন করোনায়।
এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সে সময় তিনি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে এসেছেন। এদিকে ইংল্যান্ডের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা অধ্যাপক জোনাথন ভান-তাম সামনের শীতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
যুক্তরাজ্যে হঠাৎ করেই দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে গেছে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজারের বেশি শনাক্ত হয়েছে। সোমবার থেকে ইংল্যান্ডে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে।
গত শুক্রবার নতুন করে দৈনিক সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৫১ হাজার ৮৭০। অপরদিকে গত শনিবার দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৫৪ হাজার ৬৭৪। এর আগে গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজারের বেশি ছিল।
এদিকে টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে সাজিদ জাভিদ বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় করোনার পরীক্ষা করিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ভালো অনুভব করছি এটা ভেবে যে, ভ্যাকসিনের দুই ডোজই নিয়েছি এবং আমার শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
তিনি লোকজনকে ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে বা করোনা পজিটিভ কারও সংস্পর্শে এলেই পিসিআর টেস্ট করার জন্য লোকজনকে পরামর্শ দিয়েছেন এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সূত্র: বিবিসি
এএমকে/এএসএম