দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রত্যাশিত আয়ু সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে করোনা
করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৫ হাজার ১৫২।
বেশিরভাগ দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমিয়ে দিয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সোমবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর করোনার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু সবচেয়ে কমেছে। মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে কয়েক বছরে যে অগ্রগতি হয়েছিল তা মুছে দিয়েছে করোনা মহামারি।
ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, চিলিসহ ২৯টি দেশের মৃত্যুহারের তথ্য একত্রিত করেছেন গবেষকরা। সেখানে নজিরবিহীন পরিবর্তন চোখে পড়েছে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ২৯টি দেশের মধ্যে ২৭টি দেশেই মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে।
২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ১৫টি দেশে পুরুষদের এবং ১১টি দেশে নারীদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু প্রায় এক বছর কমে গেছে। অক্সফোর্ডের লিভারহালম সেন্টার ফর ডেমোগ্রাফ্রিক সাইন্সের (এসিডিএস) গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া সহ-প্রধান জোস ম্যানুয়েল আবুর্তো বলেন, পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ যেমন-স্পেন, ইংল্যান্ড, ওয়েলস, ইতালি, বেলজিয়াম এবং অন্যান্য দেশগুলোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমে গিয়েছিল। এরপর করোনায় এই হার সবচেয়ে বেশি কমেছে।
২২টি দেশে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৬ মাসের বেশি কমেছে। গবেষকরা বলছেন, আট দেশের নারী এবং ১১ দেশের পুরুষের গড় আয়ু এক বছরের বেশি কমেছে।
তারা বলছেন, প্রায় সাড়ে ৫ বছর ধরে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু এক বছর বেশি অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে এই উন্নতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষদের। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমে গেছে দুই বছরের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৬০ বছরের কম বয়সীদের। অপরদিকে ইউরোপে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি বেড়েছে।
টিটিএন/এএসএম