পাকিস্তানে বাড়ছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ, হিসাব মেলাতে পারছে না সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ এএম, ১৮ অক্টোবর ২০২১
ছবি : সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলাতে গিয়ে যেন ডেঙ্গুর কথা ভুলতে বসেছে পাকিস্তান সরকার। জনসচেতনতা বাড়াতে বহু বছর ধরেই দেশটিতে ডেঙ্গুর মৌসুমে দৈনিক আক্রান্ত-মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করতো সরকার। কিন্তু এ বছর করোনা রোগীর সংখ্যা গুনতে গুনতেই দিন কেটে যাচ্ছে তাদের। দক্ষ লোকবলের অভাবে সংকলন হচ্ছে না ডেঙ্গু সংক্রমণের হিসাবগুলো।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডনের খবর অনুসারে, পাকিস্তানে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ও এ সংক্রান্ত প্রাণহানির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নিয়ে সতর্ক করেছেন দেশটির মেডিক্যাল ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি শুধু পাঞ্জাবেই একদিনে পাঁচ শতাধিক মানুষ ডেঙ্গু পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন অন্তত ১৮ রোগী।

পাকিস্তানে প্রায় এক দশক ধরে দেশব্যাপী নতুন ডেঙ্গু সংক্রমণ ও এ সংক্রান্ত মৃত্যুর তথ্য সংকলন করে প্রতিদিন প্রকাশ করতো সরকার। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস) মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, অতীতে পাকিস্তানি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. রানা সফদার ডেঙ্গুর তথ্য সংগ্রহ করে সব প্রদেশ, অংশীদার ও গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ার করতেন। তবে এ বছর ডা. সফদার কোভিড-১৯ নিয়ে ব্যস্ত। [মনে হয়] তথ্য সংগ্রহ, সংকলন ও হালনাগাদ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (এনআইএইচ) আর একজনও সক্ষম লোক নেই।

jagonews24

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এনআইএইচের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অবশ্য কিছুটা দ্বিমত পোষণ করে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে তথ্য সংকলনের বিষয়ে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা মন্ত্রণালয়কেই জিজ্ঞাসা করা উচিত। আমাদের যোগ্য লোক রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের উদ্যোগে নেতৃত্ব দিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেই। দুর্ভাগ্যবশত, মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করে যে, তারা কার্যকর এবং পেশাদারভাবে করোনার তথ্য সামলাচ্ছে। কিন্তু আইএসপিআরের (ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস) সাহায্য ছাড়া তারা সেটিও করতে পারতো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

গত কয়েক দশকে পাকিস্তান বেশ কয়েকবার ভয়াবহ ডেঙ্গু সংক্রমণের মুখে পড়েছে। ২০০৫ সালে দেশটিতে ডেঙ্গুতে প্রায় ছয় হাজার মানুষ আক্রান্ত ও ৫২ জনের মৃত্যু হয়। এর ছয় বছর পর ২০১১ সালে আক্রান্ত হন ২১ হাজারের বেশি, মারা যান অন্তত সাড়ে তিনশ জন। আর ২০১৯ সালে পাকিস্তানে রেকর্ড ৫০ হাজারের মতো ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছর মারা যান অন্তত ৭৯ জন।

কেএএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।