বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইরানে ৯ বিদেশি আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৮ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২২
সংগৃহীত

ইরানে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। তৃতীয় সপ্তাহ ধরে চলা এই বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৯ ইউরোপীয়কে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে দেশটি।

ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জন বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার ওই ৯ জনের মধ্যে জার্মানি, পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের নাগরিক রয়েছে।

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি আরও জানিয়েছে, ইন্টারনেট মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে ইরানের সরকারে ভাঙন ধরাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে।

অসলোভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠন জানিয়েছে, বিক্ষোভে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার নিউজ এজেন্সি নিশ্চিত করে যে বিক্ষোভে ৬০ জন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবারও বিক্ষোভ চলাকালে ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার ইরানের কুর্দিস্তানে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলার সময় একজন ইরানি বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে না। আন্দোলন আরো ছড়িয়ে পড়ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে রাস্তায় তরুণদের সাহসিকতা অসাধারণ। কোনো একক নেতৃত্ব নেই, কিন্তু তাদের কৌশল আরো পরিশীলিত হয়ে উঠছে’।

২০১৯ সালেও তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় দেশটিতে। সে সময় এক হাজার পাঁচশ মানুষ নিহত হন।

ইরান অভিযোগ করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করছে এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওয়াশিংটন সব সময় ইরানের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। যদিও তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে কানানি ‘দাঙ্গাবাজদের’ সমর্থন করে একটি দুঃখজনক ঘটনার অপব্যবহার, দেশের রাস্তায় এবং স্কোয়ারে লাখ লাখ লোকের উপস্থিতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু ইউরোপীয় দেশের নেতাদের দায়ী করেছেন।

সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা

এসএনআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।