জলবায়ু সম্মেলনে ঘুমিয়ে পড়েন ক্লান্ত প্রতিনিধিরা
মিশরে যখন ঘড়িতে সময় সকাল ৬টা, তখন জাতিসংঘের শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিদের অনেকের চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। গত দুই দিনে অনেকেই ঠিকমত ঘুমাতে পারেননি। তাই সম্মেলন চলাকালে কেউ চেয়ারে হেলান দিয়ে, কেউ বা আসনে বসেই ঘুমিয়ে পড়েন বা একটু জিরিয়ে নেন।
গত ৯ নভেম্বর মিশরের পর্যটন নগরী শার্ম আল-শেখে দুই সপ্তাহব্যাপী শুরু হয় এই শীর্ষ সম্মেলন। বিশ্বের ১৯৬টি দেশের অন্তত ৪৫ হাজার প্রতিনিধি জলবায়ু সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ৬ নভেম্বর থেকে জড়ো হন নয়নাভিরাম শার্ম আল-শেখে। এবারের জলবায়ু সম্মেলন ১৮ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। অবশেষে বাড়তি সময়ে ঐকমত্যে পৌঁছালেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
গত দুই দিন ধরে তুমুল আলোচনার পর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোর আর্থিক সহায়তাবিষয়ক ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। এখন শুধু জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত হতে হবে।
স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা এ ধরনের চুক্তিতে সম্মত হন। তবে জাতিসংঘের ২৭তম এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সমাধানের বড় কোনও চুক্তি হওয়া থেকে বিরত থেকেছেন তারা।
সম্মেলনের শেষ অধিবেশনে খসড়া চুক্তির নীতিগুলোর অনুমোদন দেওয়া হলো। এ অধিবেশনে উপস্থিত সংশ্লিষ্টরা ঝড় ও বন্যার মতো জলবায়ুবিষয়ক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে খরচ বহন করতে সহায়তার জন্য একটি ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠনে সম্মতি দেন। তবে স্বাক্ষর হওয়া ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ চুক্তিতে ধনী দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেবে আর কীভাবে ক্ষতিপূরণ পাবে ক্ষতিগ্রস্তরা সেটির রুপরেখা এখনও জানা যায়নি।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় বাড়ার চাপ ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে জলবায়ু সম্মেলন হলো এবার। এবারের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে করণীয়, ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলো।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
এসএনআর/এমএস