প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে না অর্থনৈতিক উৎপাদন
২০২০ সালে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। থমকে গিয়েছিল অর্থনৈতিক কার্যক্রম। দেখা দিয়েছিল চরম অনিশ্চয়তা। তবে ২০২১ সালে করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার, অনুমোদন ও বিতরণ ভবিষতের জন্য ইতিবাচক আশা জাগিয়ে তোলে। মানবজাতি যদি মহামারি সমাপ্তের যন্ত্র আবিষ্কার করতে পারে তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
অনেক অর্থনীতিবিদ আশা প্রকাশ করেছেন, বিশের দশকে নতুন অনেক কিছু আসতে যাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো ক্যানসারের ভ্যাকসিন, চালকবিহীন গাড়ি ও সবার জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গগলস। মনে করা হচ্ছে, বাড়ি থেকে কাজে উৎপাদনে গতি আসবে। কারণ, এতে যাতায়াতের সময় বাঁচবে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রত্যাশার চেয়ে উৎপাদন কমছে। কর্মস্থলে মানুষ যা করে সেটা উৎপাদানের মাপকাঠি। আগের চেয়ে উৎপাদন ধীরে ধীরে কমছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে এমন চিত্র দেখা গেছে। ২০২৩ সালে ভিন্ন কোনো চিত্র দেখা যাবে তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ উচ্চ উৎপাদন মানেই হলো ভালো হারের জিডিপি।
এখনো অনেক কোম্পানি করোনা মহামারির প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারেনি। এখনো লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাধ্য হচ্ছে ঘরে থাকতে। অনেক কর্মী মনে করছেন, তারা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে নেই। একারণে মজুরি নিয়ে আলোচনা করতে পারছেন। সব কিছু মিলিয়ে চাপ বাড়ছে কোম্পানিগুলোর ওপর।
মহামারি পুরোপুরি নির্মূলে সক্ষম কোনো আবিষ্কারের তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্নভাবে বিনিয়োগ বেড়েছে। কিন্তু মানুষের জীবন উন্নয়নের কোনো বিষয় দেখা যাচ্ছে না। ২০২১ সারে অনেক দোকানের তাক ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। সে পরিস্থিতি এড়াতে এবার অনেক কোম্পানি উৎপাদন বড়ানোর পাশাপাশি সংরক্ষণ সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে। অন্যরা সরবরাহ-লাইন স্নার্লস থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য কাঁচামাল, আধা-প্রস্তুত ও প্রস্তুত পণ্যের মজুদ তৈরি করেছে। এটি পরিসংখ্যানে বিনিয়োগের জন্য গণনা করে, কিন্তু উৎপাদনশীলতার জন্য কিছুই করে না।
কিছু অর্থনীতিবিদ আশা প্রকাশ করেন, উৎপাদনশীলতার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উত্থান এখনো বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু সেটা হবে অতিরিক্ত আশাবাদ। করোনার চলমান প্রকোপে মনে হচ্ছে এখনো কর্মীদের বড় একটি অংশ কর্মক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে অনুপস্থিত থাকবে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে ব্যয় কমে যাচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার ভাবতে হচ্ছে।
এমএসএম/কেএএ/জিকেএস