সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে নিন্দার ঝড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৩

সুইডেনে উগ্র ডানপন্থিদের পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দেশে দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে, বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে। এরই মধ্যে ন্যক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে তুরস্ক, সৌদি আরব, জর্ডান, কুয়েত। নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানও।

গতকাল শনিবার (২১ জানুয়ারি) স্টকহোমে তুর্কি দূতাবাসের সামনে একদল উগ্র ডানপন্থির বিক্ষোভকালে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন>> ফিলিস্তিনের পক্ষ নেওয়ায় রোনালদো রাজনীতির শিকার: এরদোয়ান

এদিন উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের বিতর্কিত নেতা রাসমুস পালুদান পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন। এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা ইসলাম ধর্ম ও সুইডেনের অভিবাসন ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে গালিগালাজপূর্ণ বক্তব্য রাখেন তিনি। এসময় প্রায় ১০০ জন সমর্থক তার পাশে ছিল।

এর আগে গত বছরের এপ্রিলে, মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে কোরআন পোড়ানোর ‘সফর’ ঘোষণা করে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন পালুদান। তার ওই কর্মসূচি ঘিরে সুইডেনে ব্যাপক দাঙ্গার সৃষ্টি হয়।

jagonews24পুলিশ নিরাপত্তার মধ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন পালুদান। ছবি সংগৃহীত

রোববার মুসলিমবিদ্বেষী এ নেতা কোরআন পোড়ানোর পরপরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিবৃতি দেয় তুরস্ক। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা আমাদের পবিত্র গ্রন্থের ওপর জঘন্য হামলায় তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে এমন ইসলামবিরোধী কাজের অনুমতি দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি মুসলিমদের নিশানা এবং আমাদের পবিত্র মূল্যবোধের অবমাননা করে।’

আরও পড়ুন>> এরদোয়ানের আপত্তিতে ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোয় ঢোকা অনিশ্চিত

শুধু তা-ই নয়, আঙ্কারা জানিয়েছে, কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে তারা সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একটি আসন্ন সফর বাতিল করেছে। ওই সফরে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। পুরোনো সব সদস্যের সমর্থন ছাড়া এ পশ্চিমা সামরিক জোটে কেউ নতুন সদস্য হতে পারে না। তাই সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্য হতে হলে অবশ্যই তুরস্কের সম্মতি আদায় করতে হবে।

jagonews24রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ছবিযুক্ত ব্যানার পোড়াচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ছবি সংগৃহীত

শুধু তুরস্ক নয়, সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, কুয়েত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও।

আরও পড়ুন>> সৌদি যুবরাজের ঘনিষ্ঠ হতে উদগ্রীব কেন এরদোয়ান?

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সৌদি আরব সংলাপ, সহনশীলতা ও সহাবস্থানের মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় এবং ঘৃণা ও চরমপন্থাকে প্রত্যাখ্যান করে।’

আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ঘৃণাত্মক বক্তব্য ও সহিংসতা পরিত্যাগ এবং ধর্মীয় প্রতীককে সম্মান জানানো এবং ধর্মের অবমাননা এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

রোববার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে সারাবিশ্বের মুসলিমদের পবিত্র মূল্যবোধের অবমাননার ঘটনায় বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

আরও পড়ুন>> পুতিন-এরদোয়ানকে বন্ধু বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রই

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক টুইটে বলেন, ‘সুইডেনে পবিত্র কোরআন অবমাননার মতো জঘন্য কাজের নিন্দা জানাতে কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলিমের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য ব্যবহার করা যায় না। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

নিন্দা জানিয়েছেন খোদ সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও। টোবিয়াস বিলস্ট্রম এক টুইটে ইসলামবিদ্বেষে উসকানিকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে বলেন, ‘সুইডেনে মতপ্রকাশের সুদূরপ্রসারী স্বাধীনতা রয়েছে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, সুইডিশ সরকার বা আমি প্রকাশ করা মতামতকে সমর্থন করি।’

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।