সোনাইমুড়িতে হিজবুত কর্মী-গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা


প্রকাশিত: ০৯:০৪ এএম, ১৬ মার্চ ২০১৬

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামে হিজবুত তৌহিদ ও গ্রামবাসীর মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় হাজারের বেশী অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে সোনাইমুড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ বাদী করে এ মামলা দায়ের করেন।

সোনাইমুড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী হানিফুল ইসলাম মামলা রজ্জু হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জাগো নিউজকে জানান, সৃষ্ট ঘটনায় একটি মামলা হলেও এতে তিনটি হত্যা, কর্তব্য কাজে পুলিশকে বাধা ও হত্যার চেষ্টাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এর আগে ( সোমবার) ঘটনাস্থল থেকে আটক হিজবুত তৌহিদের ১১৪ জনের মধ্যে ১১১ জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিন জন নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তদন্ত করে তাদেরকেও এ মামলার আসামি দেখানো হবে।

Noakhali

এ ঘটনার তৃতীয় দিনেও এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়নি। গোটা গ্রামে এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাশাপাশি হাজার হাজার অজ্ঞাত এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা। অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়েরের পর অনেকের মাঝে গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রানির ভয় কাজ করছে।  

এদিকে নোয়াখালীর সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন। এর আগে স্থানীয় চাষীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে একটি সর্বদলীয় সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী-১ চাটখিল ও সোনাইমুড়ির আংশিক আসনের সংসদ সদস্য এএইচএম ইব্রাহিম। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. রহিমা খাতুন, সহকারী কমিশনার ভুমি নিকারুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক কামাল, সোনাইমুড়ি পৌরসভার মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক, থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী হানিফুল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের, সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাবু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, চাষীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হানিফসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সংগঠনের প্রতিনিধি।

নোয়াখালী-১ চাটখিল-সোনাইমুড়ী আংশিক আসনের সংসদ সদস্য এএইচ এম ইব্রাহিম জাগো নিউজকে জানান, আইন হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই।

ঘটনা যাই হয়েছে এটির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি। পাশাপাশি নিরপারাধ কোনো ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তার প্রতি ও প্রশাসনকে লক্ষ্য রাখার জন্য বলেন।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি সার্কেল) শিকদার হাসান ইমাম জাগো নিউজকে জানান, রুল অনুসারে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনিও আশ্বস্ত করেন কোনো নীরিহ লোক হয়রানির শিকার হবে না।

Noakhali

এদিকে এেলাকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এখানো বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র্যা ব টহল দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের পৌরকরা গ্রামে হিজবুত তৌহিদ ও এলাকাবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুই হিজবুত তৌহিদ কর্মী ও একজন স্থানীয় ব্যাক্তির মৃত্যু হয়। এ সময় দুটি বসতঘর, ১২ থেকে ১৩টি মোটর সাইকেলসহ বেশ কিছু বাড়িঘরে আগুন ও ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

মিজানুর রহমান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।