দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ কেন এত বেশি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ দিনদিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোটি কোটি মানুষের জীবন। এরই মধ্যে বায়ুদূষণের কারণে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। প্রতি বছর শীতকাল এলেই যেন বেড়ে যায় এই সমস্যাগুলো।

গবেষণা বলছে, বৈশ্বিক বায়ুদূষণের হটস্পট হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়া। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত চারটি দেশ এবং দূষণের শীর্ষে থাকা ১০ শহরের মধ্যে নয়টির অবস্থানই এ অঞ্চলে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ বেশি কেন?
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গত দুই দশকে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়েছে। তার সঙ্গে হু হু করে বেড়েছে জনসংখ্যা। এর ফলে বিদ্যুৎ ও জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা বেড়েছে প্রচুর।

বেশিরভাগ দেশেই বায়ুদূষণের প্রধান কারণ শিল্পায়ন ও যানবাহনের আধিক্য। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় এর সঙ্গে আরও কিছু উপাদান রয়েছে, যা বায়ুদূষণ বাড়াতে অবদান রাখছে; যেমন- রান্না ও উষ্ণতার জন্য কাঠজাতীয় জ্বালানির দহন, মানব সৎকার এবং কৃষি বর্জ্য পোড়ানো।

আরও পড়ুন>> বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত

এ বছর নয়া দিল্লির বায়ুদূষণে পাঞ্জাব-হরিয়ানার মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে খড় পোড়ানোর অবদান ছিল প্রায় ৩৮ শতাংশ।

সড়কে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধিও এ অঞ্চলে বায়ুদূষণ বাড়ার অন্যতম কারণ। উদারহরণস্বরূপ, ২০০০ সালের শুরুর দিকের তুলনায় বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের রাস্তায় প্রায় চারগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করছে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কাজ করছে না কেন?
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। এর মধ্যে রয়েছে বায়ুর গুণমান রক্ষায় পরিকল্পনা, বিভিন্ন স্থানে দূষণ মনিটর স্থাপন এবং সবুজ জ্বালানি ব্যবহারে জোর দেওয়া। তবে এসব উদ্যোগে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো ফলাফল দেখা যায়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশগুলোর মধ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টায় সমন্বয়ের অভাবই এই সমস্যার মূল কারণ।

আরও পড়ুন>> বায়ুদূষণে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু কমছে প্রায় ৭ বছর

গবেষণায় বলা হয়েছে, ধূলিকণাগুলো শত শত কিলোমিটার পেরিয়ে, জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে এবং তাদের উৎপত্তিস্থল থেকে দূরের দেশগুলোকেও প্রভাবিত করতে পারে।

যেমন- বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনার মতো বড় শহরগুলোতে ৩০ শতাংশ দূষিত বায়ুর উৎপত্তিস্থলই হলো ভারতে। বিশ্বব্যাংক বলছে, উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বাতাসের মাধ্যমে এই দূষিত কণাগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এ কারণে বায়ুদূষণ রোধে দেশব্যাপী বা শহরব্যাপী নেওয়া পদক্ষেপগুলো খুব বেশি কার্যকারিতা দেখাতে পারছে না।

সমাধান কী?
এই সমস্যার সমাধান করতে হলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বায়ুদূষণ মোকাবিলা ব্যবস্থার সমন্বয় করতে হবে, নজরদারি বাড়াতে এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হবে।

আরও পড়ুন>> বায়ুদূষণ কমাতে কৃত্রিম বৃষ্টির চিন্তা পাকিস্তানের

এছাড়া, এতদিন কম গুরুত্ব পাওয়া কৃষি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো খাতগুলোকেও বিস্তৃত পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।