কলকাতায় সাড়ম্বরে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন ভারতীয় সেনাবাহিনীর

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:৪৭ এএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ৫৩তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করলো ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শাখা। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে ছিল নানা অনুষ্ঠান।

বিজয় দিবসের দিন বিশেষ অতিথি হয়ে ফোর্ট উইলিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিজন মিলিয়ে ৭১ জনের একটি প্রতিনিধি দল। উপস্থিত ছিলেন ভারতের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার শীর্ষ কর্মকর্তারাও।

এদিন সকালে ফোর্ট উইলিয়ামের মূল ফটকের কাছে অবস্থিত বিজয় স্মারক স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন এয়ার ভাইস মার্শাল রাহুল ভাসিন, নেভাল অফিসার-ইন-চার্জ (পশ্চিমবঙ্গ) পি সশী কুমার, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, (আইপিএস), ভারতের সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) অরূপ রাহা, ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শংকর রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মো. হোসেন আলী মুর্শেদ, মুক্তিযোদ্ধা মো. মোমেন উল্লাহ পাটওয়ারী বিপি (অব.) প্রমুখ।

এরপর সেনাবাহিনীর মাঠে আয়োজিত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি। সেদিনকার সেই স্মৃতিবিজড়িত দৃশ্য দেখে অনেকেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।

পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সেনাপ্রধান বাংলাদেশ থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উষ্ণ অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর কীভাবে এই সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা আপনারা সবাই জানেন। এরপর ১৪ দিন ধরে সেই সর্বাত্মক যুদ্ধ চলেছিল এবং তাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। এই যুদ্ধে প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করে। এই জয়ের ফলে কেবল বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মই হয়নি, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭১ এর যুদ্ধে একদম সামনের সারিতে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী, আর সেই কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসে বিজয় দিবস গর্বের জায়গা করে নিয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা মো. মোমেন উল্লাহ পাটওয়ারী বিপি (অব.) বলেন, একাত্তরের যুদ্ধে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছি। সেই যুদ্ধে বহু মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন। উভয়ের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সেই যুদ্ধে ভারতের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানকে পরাজিত করা আর আমাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা অর্জন। আমাদের মনে হয়, আমরা উভয় দেশই নিজেদের জায়গা থেকে জয়লাভ করেছি।

এদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনেও। এ উপলক্ষে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরু হয় সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। পরে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ‘মুজিব চিরঞ্জীব’ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এরপরে বাংলাদেশ গ্যালারিতে শুরু হয় বাণীপাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠান।

ডিডি/কেএএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।