গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে ফ্রান্সে উচ্চস্তরের আলোচনা
![গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে ফ্রান্সে উচ্চস্তরের আলোচনা](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/ceasefire-in-gaza-20240128180004.jpg)
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে ফ্রান্সে গেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস। স্থানীয় সময় রোববার (২৮ জানুয়ারি) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইসরায়েল, মিশর, কাতারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
ওয়াশিংটন পোস্টসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি অবশিষ্ট ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নসকে প্যারিসে পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, বৈঠকে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ইসরাইলের হামলায় অস্থায়ী বিরতির ব্যাপারে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
এর আগে মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত বছরের নভেম্বরের শেষদিকে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। তবে এখনো তাদের হাতে ১৩২ জন জিম্মি রয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রোববার সিআইএ প্রধান ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি ও মিশরের গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামেলের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি জানিয়েছেন, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করেন। আর ফ্রান্সে হতে যাওয়া বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তিসংক্রান্ত চুক্তি নবায়ন ও গাজায় শান্তি স্থাপনের জন্য আলোচনা হবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলতে রাজি হননি জন কিরবি। হোয়াইট হাউসের অন্য কর্মকর্তারও এই বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাননি। তবে জানা গেছে, আলোচনা সফল হলে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাস ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি পালন করবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে কয়েকশত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি জানিয়েছে, সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ নিয়ে কাতার ও ইসরায়েলের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে টেলিফোনে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় কাতারের কর্মকর্তারা হামাসের পক্ষ থেকে বলেছেন যে, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে তাদের সব সৈন্য প্রত্যাহার না করে, তাহলে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, হামলায় সামরিক-বেসামরিক ও দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। পাশাপাশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক মিলিয়ে ২৪০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে হামাস।
হামাসের হামলার জবাবে সেদিন থেকেই হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬৫ হাজার। তাছাড়া বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখনো চাপা পড়ে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
সূত্র: আল জাজিরা, ওয়াশিংটন পোস্ট
এসএএইচ