অস্ট্রেলিয়ান লেখককে ‘স্থগিত মৃত্যুদণ্ড’ দিলো চীন

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতারের পাঁচ বছর পর অস্ট্রেলিয়ান-চীনা লেখক ড. ইয়াং হেংজুনকে ‘স্থগিত মৃত্যুদণ্ড’ দিয়েছেন চীনের একটি আদালত। অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের মতে, দুই বছর পর এই শাস্তিকে লঘু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হতে পারে।

স্থগিত মৃত্যুদণ্ড হলো, অবিলম্বে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাকে জরুরি বলে মনে করা না হলে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর আসামিকে দুই বছর পর্যবেক্ষণের পর আচরণের উপর ভিত্তি করে সাজা কমানোর প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে হামলা বন্ধে ইরানকে চাপ দিচ্ছে চীন?

ড. ইয়াং একজন ঔপন্যাসিক। তিনি চীনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখতেন। তবে তার বিরুদ্ধে চীন সরকারের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তবে ইয়াংয়ের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি বেইজিং। ফলে তাকে এমন শাস্তি দেওয়ায় চীনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। অস্ট্রেলিয়ার সব মানুষই দেখতে চায়, ড. ইয়াং তার পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হচ্ছেন। আমরা আমাদের আইনী লড়াই চালিয়ে যাবো।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ব-এশিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ করার অভিযোগ চীনে

এর আগে চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন ড. ইয়াং। ২০১৯ সালে গুয়াংঝু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় ৫৭ বছর বয়সী এই লেখককে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। তার এই মামলা চুপিসারেই চলতে থাকে। ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে সিক্রেট ট্রায়াল বা গোপন বিচার শুরু হয়। এ নিয়ে এর আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল অস্ট্রেলিয়ান কর্মকর্তারা।

তবে সেসময় অভ্যন্তরীণ এ মামলায় অস্ট্রেলিয়াকে হস্তক্ষেপ না করার জন্য সতর্ক করে দেয় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অস্ট্রেলিয়াকে চীনের বিচার বিভাগের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানায় বেইজিং।

আরও পড়ুন: মালদ্বীপে আসছে চীনা ‘গোয়েন্দা জাহাজ’, উদ্বিগ্ন ভারত

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ড. ইয়াংকে কমপক্ষে ৩০০ বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার পরিবারের অভিযোগ, গ্রেফতারের পর ছয় মাস ধরে তার ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

ড. ইয়াংকে খেয়ালখুশি মতো গ্রেফতার করায় চীনের সমালোচনা করেছেন চীনে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত। অন্যদিকে, ড. ইয়াংয়ের সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।

আরও পড়ুন: ‘গোল্ডেন ভিসা’ বাতিল করলো অস্ট্রেলিয়া, বাড়বে কর্মী ভিসা

সিডনিতে ইয়াংয়ের বন্ধু ফেং চোংয়ি বিবৃতিতে বলেছেন, চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে চীন সরকারের সমালোচনা করায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ড. ইয়াং মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের মতো সার্বজনীন মূল্যবোধের পক্ষে কথা বলার কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, সিএনএন

এসএএইচ