চিফ প্রসিকিউটর

অভ্যুত্থানে নিহত-আহত প্রত্যেকটি ব্যাপারে হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৮ পিএম, ১২ মে ২০২৫
শেখ হাসিনা/ফাইল ছবি

জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যত লোক আহত হয়েছে সবগুলোর বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ রয়েছে। সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে প্রতিবেদনে। এখন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যত লোক মারা গেছে, যত লোক আহত হয়েছে প্রত্যেকটার ব্যাপারে তার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে চার্জ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে উসকানি ও সরাসরি নির্দেশ। এ বিষয়ে তার বহু কল রেকর্ড, অডিও-ভিডিও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট তিনটি ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে।

জুলাই-আগস্টের সকল হত্যাকাণ্ডের দায় শেখ হাসিনারআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটরসহ তদন্ত কর্মকর্তারা

তবে সেগুলো এখনই জানাতে চাননি তিনি। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রতিবেদনে এসেছে প্রায় দেড় হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে, ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে গুলি করে আহত করা হয়েছে, নারীদের ওপর বিশেষভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছিল, লাশ একত্রিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, পোস্টমর্টেম করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, ডাক্তারদের চিকিৎসা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে শেখ হাসিনা নিজে গিয়ে বলেছিলেন, এসব ভর্তি রোগীকে যাতে চিকিৎসা দেওয়া না হয়। রোগীরা যখন যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে চেয়েছিল তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাতে পচে গেলে কেটে ফেলতে হয় সেরকম নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলকারীদের ওপর দায় চাপানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় নিজেদের লোকদের দিয়ে অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

এদিন বেলা ১১টার দিকে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর ও তদন্ত কর্মকর্তারা এ প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও সরাসরি নির্দেশসহ পাঁচটি অভিযোগ এনেছেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।

এরপর সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সব হত্যাকাণ্ডের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি শেখ হাসিনার। তিনি এ গণহত্যা ও হত্যার উসকানিদাতা, প্ররোচনাদাতা ও সরাসরি নির্দেশদাতা।

জানা গেছে, প্রথমে শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেও পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

এফএইচ/এসএইচএস/এএসএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।