শেখ পরিবারকে প্লট দিতে গণভবন থেকে চিঠি দেওয়া হয় মন্ত্রণালয়ে
শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ দিতে গণভবন থেকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। এছাড়া তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ওসমান গণি গণভবনের সোনালী ব্যাংক শাখায় ছয়টা প্লটের পে-অর্ডার করেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষীদের দেওয়া জবানবন্দি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, শেখ পরিবারের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় এদিন পাঁচজন সাক্ষী দেন। তারা হলেন- সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার রিয়াদ মাহমুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গনি, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রেজিস্ট্রার মিঠুন চন্দ্র বালা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রেজিস্ট্রার নাহিদ হোসেন।
এই মামলায় আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরা করা সম্ভব হয়নি। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আদালত থেকে পাঁচজন সাক্ষীকে সমন পাঠানো হয়েছিলে। ইতিমধ্যে এই সাক্ষীরা আদালতে এসেছেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, এবার নাহিদের
গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠন শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
পৃথক তিন মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ আদালতে তিনটি করে মোট ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানো হয়।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাহ উদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সম্প্রতি সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
এমআইএন/এনএইচআর/জেআইএম