করোনাভাইরাস : প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে লিগ্যাল নোটিশ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট আটজনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে রোববার এই নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে করোনাভাইরোস প্রতিরোধে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মনিটরিং সেল গঠন, সারাদেশে পর্যাপ্ত মাস্ক সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। ভাইরাস প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নোটিশে সংশ্লিষ্টদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে, অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ূন কবির পল্লব স্বাস্থ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিমান সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আইসিডিডিআরবি পরিচালক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর এই নোটিশ পাঠান।
আইনজীবী নোটিশে করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে একটি সেন্ট্রাল মনিটরিং সেল এবং প্রতিটি জেলায় মনিটরিং সেলের শাখা স্থাপন করার কথা বলেন। এছাড়া জনগণের জন্য ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় মাস্ক এবং অন্যান্য দরকারি সামগ্রীর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা-সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। শনিবার এতে মারা গেছেন আরও ৮৯ জন। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ৮১৩ জন। এর মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ড ও এর বাইরে মৃত্যু হয়েছে ৮১১ জনের। এছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে মারা গেছেন একজন করে।
রোববার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০২-০৩ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্সকেও ছাড়িয়ে গেছে। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়, আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৯৮ জন।
শনিবার চীনে নতুন করে আরও দুই হাজার ৬৫৬ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। ফলে দেশটির মূল ভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। এদিন চীনে প্রথমবারের মতো কোনো বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল করোনাভাইরাসের উৎসস্থল উহানে এক মার্কিন ও এক জাপানি নাগরিক মারা গেছেন।
মানুষ থেকে মানুষে সহজেই সংক্রমণযোগ্য হওয়ায় বেশিরভাগ দেশ চীনের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। চীনফেরতদের জন্য সীমান্ত বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ। জাপান ও হংকংয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে দুটি প্রমোদতরীকে। এর যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে মূলভূমিতে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না।
এফএইচ/বিএ/এমকেএইচ