দেশে জরুরি অবস্থা জারির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২০

সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) এই আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী।

আইনজীরা হলেন- মোহাম্মদ শিশির মনির, আসাদ উদ্দিন ও জুবায়েদুর রহমান। আবেদন করার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে জানান আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরল তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে জরুরি অবস্থা জারির জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮ হাজার ৯৬১ জন। এ ছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৫ হাজার ৬৭৩ জন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনেক দেশেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। মারা গেছেন ১ জন।

আবেদনে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এরই মধ্যে বিশ্বের সাতটি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দিন দিন করোনা ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।’

‘করোনা এখন বৈশ্বিক মহামারি। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ এবং আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় নয় হাজার মৃত্যুবরণ করেছেন। এটি অতিমাত্রায় সংক্রমক ভাইরাস। এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ব। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, স্পেন, কানাডা ও বেলজিয়াম জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশ মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশেও এই সংক্রমক ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত নয়। এ পর্যন্ত ১৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং আক্রান্তদের মধ্যে থেকে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকার সবশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে এবং সব খেলা ধুলা স্থগিত করেছে। রিপোর্ট আসছে দেশে করোনা শনাক্তকারী কিটসের সংখ্যা মাত্র ১,৭৩২। এই আঠারো কোটি জনগোষ্ঠীর জন্য শনাক্তকারী কিটসের এই সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। সরকার বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মেনে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রিপোর্ট আসছে, নিয়ম না মানার কারণে এই ভাইরাস এখন কমিউনিটিতে সংক্রমিত হচ্ছে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় করোনা আতঙ্কে স্থানীয় লোকজন বিদেশফেরত লোকদের বাড়িঘর ঘেরাও করছে।’

‘বিদেশ ফেরত ৩০ জন বিচারক এবং ৪ জন ডাক্তারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সভা, সমাবেশ ও মাহফিল অব্যাহত আছে। করোনা আতঙ্ক কাজে লাগিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফলে বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশ ও জাতি একটি আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাহীনতা এবং সংকটের দিকে ধাবিত হতে চলেছে।’

আবেদনে আরও বলা হয়, ‘বিদেশি ক্রেতারা পোশাক খাতের ক্রয় আদেশ বাতিল করছে এবং অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের হিউম্যান বায়ো সিকিউরিটি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চরম হুমকির সম্মুখীন। এ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে দেশ ও জাতি আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি পরবর্তী ঘোষণার মাধ্যমে ১৪১ ক(২)(ক) এর অধীনে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা যেতে পারে।’

এফএইচ/এনএফ/জেডএ/এমকেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।