মানবিক সহযোগিতায় অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আইনজীবীরা
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সবাইকে লকডাউনে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়ায় বিপাকে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন সুপ্রিমকোর্টের বেশ কয়েকজন আইনজীবী। তারা এসব মানুষের দৈনন্দিন খাবারের ব্যবস্থা করছেন। পাশাপাশি চিকিৎসকদের জন্য প্রায় আড়াই শতাধিক পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করেছেন।
এদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার নিজ এলাকা মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে দুই ইউনিয়নের নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন নিজ এলাকা হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬টি রেইন কোর্ট দিয়েছেন। তার নিজের গাড়ি করোনা রোগী বহনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ১৮ জন গৃহকর্মীর খাবার ও চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। পরে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘করোনায় সৃষ্ট কঠিন পরিস্থিতিতে, যারা বাসায় কাজ করেন, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন বাসায় কাজ (ছুটা কাজ) করেন তারা অনেকই অসহায় অবস্থায় আছেন। বিভিন্ন বাসায় কাজ করার জন্য তারা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন। এই পরিস্থিতিতে, তাদের অবস্থা যে খুব ভালো তা কিন্তু নয়।’
তিনি আরও লেখেন,‘আমি এমন একজনকে চিনি যার ৩ মেয়েসহ পরিবার চালাতে হয়। এক মেয়ে আবার গর্ভবতী। উপরন্তু তিনি নিজেই অসুস্থ। তাই, এই কঠিন সময়ে তিনিসহ এমন মোট ১৪ জনের খাবার, ঔষধের চিকিৎসার খরচের দায়িত্ব নিলাম। প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ আমাকে এই পরিশ্রমী নারীদের প্রতি সহযোগিতা ও সম্মান করার তৌফিক দেন।’
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ফেসবুকে আরও লেখেন,‘এই ধরনের সহযোগিতা খুব বেশি ব্যয়বহুল নয়। আমরা বাইরে যেসব রেস্টুরেন্টে খাবার খাই তা এখন বন্ধ। সেই টাকা থেকেই একটি অসচ্ছল পরিবার চলতে পারে। তাই নিজ নিজ সমর্থ অনুযায়ী আমরা চেষ্টা করতে পারি।’
এছাড়া সুপ্রিমকোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন ও তার চিকিৎসক স্ত্রী খাদিজা সিদ্দিকা রাজধানী ঢাকার কমলাপুরের একটি গ্যারেজের ১২ রিকশাচালককে প্রতিদিন তিন বেলা খাবারের বন্দোবস্ত করেছেন।
আব্দুল কাইয়ুম লিটন তার ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে জানান, আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ,আমাদের প্রিয় কিছু ভাই ও বোনের সহযোগিতায় মোহাম্মদপুর এলাকার আরও একটি রিকশা গ্যারাজের ২৫ জন রিকশাচালক ভাইকে আগামী এক মাসের দৈনিক তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছি। ঢাকা শহরে প্রান্তিক মানুষের সংখ্যা আমার জানা নেই। তবে এটা জানি বিত্তবানদের সংখ্যাই বেশি। আর তারা ইচ্ছে করলেই প্রান্তিক মানুষগুলার দায়িত্ব নিতেই পারেন। আসুন সবাই এই মহৎ কাজের সফলতা কামনা করি এবং যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের জন্য দোয়া করি।
তিনি জানান, এ কাজে আরও তিন আইনজীবী সহায়তা করেছেন।
খাবারের ব্যবস্থা ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে অপর তিন আইনজীবীর সহযোগিতায় আব্দুল কাইয়ুম লিটন আড়াই শতাধিক পিপিই চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া ও মৌলভীবাজারে পাঠিয়েছেন। এ কাজে যে তিন আইনজীবী সহায়তা করেছেন তারা হলেন, ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন, ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ দীপা ও আফরোজা ফিরোজ মিতা।
এফএইচ/এমএফ/এমএস