স্বল্প সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মুক্তি দিতে নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩২ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কারাবন্দিদের রক্ষায় হত্যা, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, মাদক, দুর্নীতির মামলা ব্যতীত স্বল্প সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) দেশের সব কারবন্দির পক্ষে ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিল (এনএলসি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী নিজে।

ই-মেইলের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, কারা কর্তৃপক্ষের (আইজি প্রিজন) প্রতি এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয় নোটিশে।

নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কারাবন্দি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। একই হাসপাতালে বন্দিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় কারারক্ষীসহ মোট ১১ জন। আক্রান্তরা রাজধানীর দুটি হাসপাতালে ভর্তি। এছাড়া কারাগার-সংশ্লিষ্ট ৬২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

‘গত ২২ এপ্রিল এক কারারক্ষীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে কারা অধিদফতর। এরপর আক্রান্ত কারারক্ষীর রুমমেটসহ আর পাঁচজনের মধ্যে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা আরেক কারাবন্দিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত কারাবন্দির মাধ্যমে দায়িত্বরত কারারক্ষীদের মধ্যে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করছেন কারা চিকিৎসকরা।’

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, সাতজনকে কোভিড- ১৯ চিকিৎসায় ডেডিকেটেড দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যাদের মধ্যে ভাইরাসটির উপসর্গ দেখা দিচ্ছে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।’

‘ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দি রোগীদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হাসপাতাল থেকে কারারক্ষীরা কোডিভ- ১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কারারক্ষী যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ডিউটি করার সময় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা থাকতেন ব্যারাকে, সেখানেও ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পুরো ব্যারাকটি লকডাউনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ব্যারাকের পুরো ১০৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন যারা আছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বলা হয়েছে।’

‘তাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আমার আবেদন এই যে, মানুষের জন্য আইন ও বিচার। অতএব সবার আগে মানবতা। বাংলাদেশের সংবিধানেই মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এ কারণে করোনার সংক্রমণ থেকে কারাবন্দিদের বাঁচাতে বাংলাদেশ সরকারের নির্বাহী আদেশে এই আইনি নোটিশপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মানবিক দিক বিবেচনায় হত্যা, ধর্ষণ, মাদক, এসিড নিক্ষেপ, দুর্নীতি মামালায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ব্যতীত বিচারাধীন ও স্বল্প সাজার আসামিদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় করোনার ভয়াল থাবায় কারাবন্দিরা মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হতে থাকলে তা হবে দেশ ও জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক ইতিহাস। যার দায়ভার রাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে’— উল্লেখ করা হয় নোটিশে।

এফএইচ/এমএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।