সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন মওকুফ চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন মওকুফ করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয় দুর্যোগময় মুহূর্তে আর্থিক অনটনের কথা বিবেচনা করে আগামী সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার ইমেইলে সরকারের মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে এই আবেদন করেন। সোমবার (৪মে) দুপুরে আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জনস্বার্থে মানবাধিকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন পক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি করা আবেদনে বলা হয়, বর্তমান সময়ে করোনা একটি আতঙ্কের নাম, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এর পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানক এবং দুর্যোগপূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে দীর্ঘদিন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে যেতে পারছে না, ঘটছে লেখাপড়ার ব্যাঘাত। একইসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও পারছে না শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের পড়াশোনা করানো সম্ভব হচ্ছে না।
যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের পাঠ দান করা হচ্ছে তাই এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক টিউশন ফি আদায় করতে পারে কি-না সে বিষয়ে প্রশ্নও রাখা হয় আবেদনে।
আবেদনে আরও বলা হয়, করোনার সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত যুক্তিসংগত সময়োপযোগী এবং মানবিক। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চাপ দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করছে। টিউশন ফি আদায় করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের প্রতি নোটিশ দেয়া হচ্ছে তাদের সামনের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না এবং তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন মনে করছে যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, এবং মধ্যবিত্ত অনেকের চাকরি ও ব্যবসা বন্ধ রয়েছে বা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতন দেয়া কষ্টকর। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যদি পূর্ণ মাসিক বেতন আদায় করা হয় তাহলে বিষয়টি হবে অমানবিক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে সেই চুক্তির পরিপন্থী।
এফএইচ/এনএফ/জেআইএম