৮৯ হাজার কারাবন্দির সুরক্ষা : রিটের শুনানি ১৫ জুন পর্যন্ত মুলতবি
দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ প্রায় ৮৯ হাজার বন্দিকে করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে বাঁচাতে তাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সরকার কারাগারে অতিরিক্ত আটকদের সুরক্ষার বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারী আইনজীবীকে পর্যবেক্ষণ করতে বলেছেন আদালত। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
মঙ্গলবার (২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল বেঞ্চ মৌখিকভাবে এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
এর আগে ৮৯ হাজার কারাবন্দির করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা চেয়ে রিট করেন আইনজীবী শিশির মনির। এতে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও কারা মহাপরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ১৭ মে ই-মেইলের মাধ্যমে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল বেঞ্চে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
শিশির মনির বলেন, রিটে দেশের সকল কারাগারে কারাবন্দি ও কারারক্ষীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশের আলোকে কী কী প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে তা-ও আদালতকে জানানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এ আইনজীবী বলেন, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা কারাবন্দিদের অবস্থা খুবই নাজুক। দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি রয়েছেন। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪১ হাজার ২৪৪ জনের ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে সেখানে ৮৫ হাজার বন্দি রয়েছেন। এই অবস্থায় কারাগারে বন্দিদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ২৩ জন করারক্ষী এবং দুজন বন্দির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গত ১২ মে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার প্রায় তিন হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এটি অবশ্য প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এটি যথেষ্ট নয় বলছেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
এর আগে বন্দিদের করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় কারা কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা জানাতে গত ১৪ মে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান আইনজীবী শিশির মনির। বিবাদীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ জানাতে ওই নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তিনি। সেই নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এফএইচ/এসআর/জেআইএম