জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা

‘সেলিম খান যেভাবে ছিলেন সেভাবে থাকবেন’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
ফাইল ছবি

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের আলোচিত চেয়ারম্যান ‘বালুখেকো’ সেলিম খানের জামিন আবেদন বিষয় শুনানির জন্য ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ পর্যন্ত তিনি যেভাবে আছেন সে অবস্থায় থাকবেন।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামানের আদালতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ১২ অক্টোবর জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এদিন তদন্ত প্রতিবেদনসহ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ পর্যন্ত তিনি যেভাবে আছেন সে অবস্থায় থাকবেন বলে বিচারক আদেশ দেন।

এদিন সেলিম খানের পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন শাহিনুর রহমান। দুদকের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন খুরশীদ আলম ও মাহমুদ হোসন জাহাঙ্গীর।

এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেলিম খানের হাইকোর্টের দেওয়া চার সপ্তাহের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুদক।

তার আগে ১৪ সেপ্টেম্বর ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেলিম খানকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চার সপ্তাহ পর তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ এই মামলা করে দুদক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। এছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

দুদক সচিব জানান, অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সভায় সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সেলিম খানের ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ে একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলেমেয়েসহ অন্য জমির মালিকরা অস্বাভাবিক মূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা।

জমির অস্বাভাবিক মূল্য নিয়ে জেলা প্রশাসকের তদন্তে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করার পরিকল্পনা ধরা পড়ে। পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক, যা নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এর আগে চাঁদপুর ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরের নদী অঞ্চল থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ওই চেয়ারম্যানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে।

এমনকি অনুমতি ছাড়াই তিনি বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সবশেষ ৬ এপ্রিল সেলিম খানের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যাচাইয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুমিল্লার সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা’দাতের নেতৃত্বে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক টিম।

জেএ/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।