রাজধানীর সাততলা বস্তি উচ্ছেদ নিয়ে হাইকোর্টের রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
ফাইল ছবি

রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তি উচ্ছেদ এবং এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সরকারের সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রুল জারির বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এসএম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আলী আকবর খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তামান্না ফেরদৌস।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর বস্তিবাসী মো. মহিউদ্দিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ রিটটি করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন আদালত।

বেহাত হওয়া জায়গা উদ্ধারের পর সেখানে অটিস্টিক একাডেমি ভবন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন, জাতীয় ব্লাড সেন্টার ভবন, সেবা পরিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই ভবন ও সেন্টার ফর মেডিকেল বায়োটেকনোলজি ভবন নির্মাণ করতে চায় সরকার।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে প্রথম সাততলা বস্তি উচ্ছেদের নোটিশ জারি করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বস্তিবাসীর পক্ষে ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি শেষে বস্তি উচ্ছেদ-সংক্রান্ত নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১০ সালে আরেক দফা বস্তি উচ্ছেদের চেষ্টা চালালে আবারও আদালতে যায় বস্তিবাসী।

প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর সাততলা বস্তি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বস্তি উচ্ছেদের পর ওই জমিতে সাতটি প্রতিষ্ঠানসহ ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেহাত হয়ে যাওয়া ৫০ একর জমি উচ্ছেদে ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় কমিটিও গঠন করেছিল সরকার।

সর্বশেষ কয়েকদিন আগে সাততলা বস্তি উচ্ছেদ করতে বস্তিতে বসবাসরত সব বাসিন্দাকে জায়গা খালি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার নোটিশ দেয় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১০ একর জায়গা সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয় তারা।

পুনর্বাসনের আগে বস্তি উচ্ছেদ করা যাবে না- এমন দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে বস্তিবাসী সড়কে নেমে আসেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

জানা গেছে, মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের ৪৭ দশমিক ৮৮ একর এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ৩৫ একর জমি রয়েছে। সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের ৮ একর জমি দখল করে সাততলা বস্তি গড়ে উঠেছে। এই সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের দুই পাশ ঘিরে সাততলা বস্তির অবস্থান। সাততলা বস্তিতে প্রায় ৩০ হাজার ছিন্নমূল মানুষ বসবাস করে। ছোট ছোট টিনের ছাউনি দিয়ে অন্তত ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি তোলা হয়েছে। এসব ঘর থেকে প্রতি মাসে গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। বস্তি ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সন্ত্রাসীরা অবৈধ ব্যবসার জাল ছড়িয়ে রেখেছেন। ক্ষমতার পরিবর্তন হলে বস্তি নিয়ন্ত্রকদের পরিচয়ও পাল্টে যায়।

এফএইচ/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।