মামলার এজাহারে পুলিশ

বিএনপি কার্যালয়ে পাওয়া যায় ১৫টি ককটেল, চার হাজার কেজি চাল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২
ফাইল ছবি

১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এসময় দলটির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ১৫টি ককটেল, চার হাজার কেজি চাল, ২৫ কেজি ডাল ও নগদ দুই লাখ টাকা জব্দ করে পুলিশ।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় রিজভীসহ বিএনপির ৪৭৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাত আরও দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

মামলার অভিযোগে এসব কথা উল্লেখ করে পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়, জব্দ ককটেলগুলো বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল।

গতকাল বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেকে। এসময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল, পানি, খিচুড়ি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ।

অভিযান চলাকালে নয়াপল্টন থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে বিকল্প হিসেবে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ বা পূর্বাচলে বিএনপিকে সমাবেশ করতে বলা হয়। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া ঢাকার ভেতরে সমাবেশের বিকল্প ভেন্যু পেলে বিএনপি বিবেচনা করবে বলে জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই নয়াপল্টনের একপাশের সড়ক দখলে নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। জড়ো হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বিকেল তিনটার দিকে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মারমুখী হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তা ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে তারা রাস্তা থেকে সরে না গিয়ে হঠাৎ করেই পুলিশের ওপর হামলা চালায়। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নয়াপল্টন এলাকা। টিয়ারশেল নিক্ষেপে কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টন, মতিঝিল, শান্তিনগর এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবহার করা হয় জলকামান।

জেএ/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।