সীতাকুণ্ডে দুই কিশোরী হত্যা

একজনের মৃত্যুদণ্ড, তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩
আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি আবুল হোসেনকে

প্রায় পাঁচ বছর পর ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর দুই কিশোরী হত্যার রায় ঘোষণা হলো। এতে আবুল হোসেন (৩১) নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ওমর হায়াত ওরফে মানিক নামে এক ব্যক্তিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তদন্তে অবহেলা ও গাফিলতি হয়েছে বলে মনে করেন আদালত। এ জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলীম উল্লাহ এ আদেশ দেন। রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আবুল হোসেনের মৃত্যু কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে আরও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারক।

আরও পড়ুন: মানুষ হত্যার অপরাধ কী হিসেবে গণ্য?

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। আর অন্য আসামি জামিনে থাকলে তিনিও ছিলেন আদালতে। রায় ঘোষণার পর আবুল হোসেনকে পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠান আদালত।

জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। দণ্ডিত আবুল হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার মো. ইসমাইলের ছেলে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, সবিরাণী ত্রিপুরা (১৬) এবং সকলতি ত্রিপুরাকে (১৭) হত্যা করা হয়। ২০১৮ সালের ১৮ মে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল মহাদেবপুর ত্রিপুরা পল্লীতে ঘটে এই ঘটনা। হত্যার পর ওই দুই কিশোরীর মরদেহ রশি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়ন রয়ে গেছে অন্ধকারে

এ ঘটনায় আবুল হোসেনসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন নিহত সবিরাণীর বাবা সুমন ত্রিপুরা। পরে ওই মামলায় আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। আবুল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ জানায়, তখন আবুল হোসেন জবানবন্দিতে জানান, তিনি সকলতি ত্রিপুরার গলায় রশি বেঁধে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। আর অন্য আসামি ওমর হায়াত মানিক এবং রাজিব হত্যা করেন সবিরাণী ত্রিপুরাকে।

এদিকে এ মামলার তদন্তের সময় রাজিব দুর্বৃত্তদের গুলিতে মারা যান। ফলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যায়। বিচারচলাকালে আদালত ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: ‘শাসন’ করায় শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, এই হত্যা মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু ওমর হায়াত ওরফে মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এতে করে আদালত মনে করেছেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি ছিল। যে কারণে আদালত তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ইকবাল হোসেন/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।