সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ির মূল নকশা দাখিলের নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর নিয়ন্ত্রণে থাকা গুলশানের পরিত্যক্ত বাড়ির নকশা (মূল লে আউট প্ল্যান নকশা) আগামী ৭ দিনের মধ্যে দাখিল করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে আদালতের কার্যক্রম ছাড়া মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা না চালাতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রুল শুনানির জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গুলশানের ওই বাড়ি নিয়ে রিটের শুনানিতে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গত বছরের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে প্রয়োজনীয় নথি দাখিলে রাজউক ও গণপূর্তকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পক্ষে তার আইনজীবী হলফনামা দাখিল করেছেন। আর রাজউক, গণপূর্ত ও দুদকের পক্ষেও প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্যারিস্টার সুমনকে সালাম মুর্শেদীর বাড়ির ভিডিও সরানোর নির্দেশ

গত ৩০ জানুয়ারি সালাম মুর্শেদীর নিয়ন্ত্রণে থাকা গুলশানের পরিত্যক্ত বাড়ি সংক্রান্ত দুটি ভিডিও ফেসবুক থেকে সরাতে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া এ মামলা নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে আর কোনো ভিডিও প্রকাশ না করতে নির্দেশ দেন আদালত। এ বিষয়ে শুনানির জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।

এর আগে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে পরিত্যক্ত (‘খ’ তালিকাভুক্ত) বাড়িটি দখলের অভিযোগ তুলে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন>> সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি: অনুসন্ধানে দুদকের কমিটি

আদেশে বাড়িসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব এবং রাজউকের চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ওই বাড়ি নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দুদকে দিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে রাজউক ও দুদক হলফনামা আকারে নথির কপি সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে দিলে তিনি নথির তথ্য অনুযায়ী বক্তব্য দিয়ে নিজের ফেসবুকে দুটি ভিডিও প্রকাশ করেন।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সিইএন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। তবে আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।

আরও পড়ুন: সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই

রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।

২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।

এফএইচ/এএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।