শ্রম আইন লঙ্ঘন

ড. ইউনূসের পক্ষে বাদীকে জেরা শেষ, পরবর্তী সাক্ষ্য ১৮ অক্টোবর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৭ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৩

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে বাদী শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে আসামিপক্ষের জেরার কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। তার জেরা শেষে মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হাদিউজ্জামানের সাক্ষ্য আংশিক নিয়ে আগামী ১৮ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্যে দিন ধার্য করা হয়েছে।

বুধবার (১১ অক্টোবর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে মামলার বাদীকে জেরা করেন ড. ইউনুসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।

এ দিকে বুধবার মামলার বাদীকে জেরা করার সময় ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের কারণে এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। এদিন দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ড. ইউনুসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জেরায় মামলার বাদী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমে কর্মরত ৬৭ জনের সবাই কর্মচারী। অথচ আমরা দেখাই গ্রামীণ টেলিকমের মাত্র ৯ জন কর্মচারী। যার মধ্যে পাঁচজন ড্রাইভার ও চারজন ম্যাসেনজার। বাকিরা অফিসার, ম্যানেজার থেকে শুরু করে এমডি পর্যন্ত। অথচ সাক্ষী সবাইকে কর্মচারী বলে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এ বিষয়টি উত্থাপনের পর কলকারখানা প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান ও সৈয়দ হায়দার আলী বিরোধিতা করেন। এটা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আদালত জেরার কার্যক্রম সমাপ্ত করেন। তখন আমি বলি, এটা আপনি করতে পারেন। তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এসময় বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। এরপর আবার বিকেল ৩টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মামলার বাদীকে জেরা শেষ হলে আগামী ১৮ অক্টোবর দ্বিতীয় সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

কলকারখানা পরিদর্শকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, আমাদের প্রথম সাক্ষী জেরার চলছিল। এর মধ্যে কিছু ডিফেন্স ডকুমেন্ট এবং কিছু কথা বলার ওপর জিজ্ঞাসা করছিলেন। যাদের নাম বলছেন, তিনি জানান আমি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। এর পরে উনি প্রত্যেক নাম ব্যবহার করে সাজেশন দেন। তার পরে আমরা বলেছি, যেহেতু উনি অস্বীকার করেছেন আমরা আপত্তি জানায়। তার পরে তর্কাতর্কি করে দরখাস্ত দেবেন। কিন্তু আদালত নেমে গেল। এর পরে আবার উঠলো কিন্তু দরখাস্ত আর দিলেন না। এর পরে জেরা শেষ করা হয়েছে, সময় ছিল না বলে দ্বিতীয় সাক্ষী শুরু হয়েছে, পরবর্তী শুনানি ১৮ অক্টোবর ঠিক করেন আদালত।

এর আগে ওই মামলায় গত ২২ আগস্ট এ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করার পর তাকে জেরা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবীরা। এরপর গত ৫, ১৩, ২০ ও ২৭ সেপ্টেম্বর, ৩ ও ১১ অক্টোবর সাক্ষীকে জেরা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী। তারই ধারাবাহিকতায় আজও জেরা অনুষ্ঠিত হয়।

এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন ও ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। অপর দিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।

এফএইচ/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।