মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেরপুরের ৪ আসামির পক্ষে পরবর্তী যুক্তিতর্ক ২০ নভেম্বর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০২ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেরপুরের চার আসামির পক্ষে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে। পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা ও রেজিয়া সুলতানা চমন। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার শেখ মুশফেক কবীর।

চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার পর আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেছে।

এই মামলায় আনা অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে (ফরমাল চার্জ গঠন করার পর) বিচার শুরু হয়। এরপর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে প্রসিকিউশন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শুরু হয়। মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) রাষ্ট্রপক্ষের ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

২০১৭ সালের ২৭ জুলাই একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শেরপুরের চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ওইদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য এম সানাউল হক।

শেরপুরের মামলায় ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর তদন্ত শুরু করে শেষ হয় ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই। এরপর ৫৪ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ৫২তম তদন্ত প্রতিবেদন বলেও জানান এম সানাউল হক।

তদন্ত প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন মনোয়ারা বেগম।

আসামিদের মধ্যে এএসএম আনিসুজ্জামান ফারুক (৫৮), একেএম খান আকরাম হোসেন (৬২) ও এমদাদুল হক ওরফে খাজা ডাক্তারকে (৭৪) প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। আসামি মো. মোখলেছুর রহমান তারা (৭০) পলাতক ছিলেন। গত ২১ জুন ময়মনসিংহ নগরীর ধোপাখোলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। তিনি শেরপুরের নকলা থানার কুর্শা বাদাগৈর গ্রামের প্রয়াত ময়েজ উদ্দিন আহম্মদের ছেলে।

প্রতিবেদনে এমদাদুল হক, এ কে এম আকরাম হোসেন এবং এএসএম আনিসুজ্জামান ফারুক বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ১৯৭১ সালের ২১ জুলাই রাত দিনগত সাড়ে ৩টায় তার নেতৃত্বে রাজাকাররা শেরপুর জেলার নকলা থানার বিবিরচর গ্রাম থেকে সোহরাব উদ্দিনসহ তার শ্যালক কুদ্দুস ও কুদ্দুসের চাচাতো ভাই মোবারক আলীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তাদের হত্যাসহ বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া ৭১ এর ২৭ আগস্ট বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মো. শাহজাহান আলী সজু নামাজ শেষে নকলা বাজারের দিকে আসার পথে রাজাকার তারা তার নেতৃত্বে সজুকে নকলা স্কুলে টর্চার সেলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে।

এসব ঘটনায় ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।