বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা

সহিদুর আত্মসমর্পণ করেন কি না, দেখে আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
ফাইল ছবি

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মসমর্পণ করেন কি না সেটি পর্যবেক্ষণ করে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) আদেশ দেবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ নভেম্বর) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বোরহান উদ্দিনর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এসময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট রক্ষা করতে হবে, প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি দেখতে হবে।

এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, মাই লর্ড, জামিন পিটিশনে কোনো টেন্ডার নম্বর ছিল না। একই সঙ্গে এই মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আপিল বিভাগের আদেশও গোপন করেন সহিদুর রহমান মুক্তির আইনজীবী।

এসময় আপিল বিভাগ বলেন, এই প্র্যাকটিস বন্ধ করতে হবে। বিকাশে পেমেন্ট নিয়ে সিরিয়াল এগোনো বন্ধ করতে হবে। এই আসামি এর আগেও জামিন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন, ধরা পড়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দেন।

পরে মুক্তির আইনজীবী বলেন, আসামি সহিদুর রহমান মুক্তি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন। এখান থেকে গিয়ে টাঙ্গাইল কোর্টে আত্মসমর্পণ করবেন।

এর আগে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তার আইনজীবীকে সতর্ক করেন আদালত। তথ্য গোপন ও নোটিশ নিয়ে তার আইনজীবী এম এ মুস্তাকিম ও মো. জাকারিয়া হাবিবকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেছেন আদালত। এর আগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন আইনজীবী। একই সাথে, তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গতকাল রোববার (২৭ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিকল করে এ আদেশ দেন।

তারও আগে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন স্থগিতের বিষয়ে শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মতি বেঞ্চে পাঠিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত।

হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদলত এই আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পী। তারই ধারাবাহিকতায় আছে সেটি শুনানির জন্য উঠে।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে তিনি জামিন পান। জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছালে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

চেম্বার জজ আদালতে সোমবার শুনানির সময় জজ জানতে চান আসামি বের হয়ে গেছেন কি না। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, তিনি বুধবার দুপুরে বের হয়ে গেছেন। পরে চেম্বার জজ বলেন, যেহেতু বের হয়ে গেছেন সোমবার এটি আপিল বিভাগে থাকবে।

এর আগে সহিদুর রহমান খান হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে জামিন আবেদন বিচারাধীন থাকার তথ্য গোপন করে আরেকটি বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন। গত ১৯ জুলাই করা জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় বিষয়টি নজরে আনার পর আদালত জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন মুক্তি। চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।

পরে আপিল বিভাগ গত ২৭ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার বিচারকাজ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। এর মধ্যে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে সহিদুর রহমান খান মুক্তি জামিন পান। ওই আদেশ কারাগারে পৌঁছালে বুধবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সহিদুর রহমান এই মামলার অন্য আসামি টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। তার বাবা আতাউর রহমান খান একই আসনের সংসদ সদস্য। দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অন্য তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

এফএইচ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।