সুনামগঞ্জে মানবতাবিরোধী অপরাধ

মুকিতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আইওর পরবর্তী সাক্ষ্য ২৪ জানুয়ারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫১ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
ফাইল ছবি

একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার মুকিত মনিরসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৪ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্যান্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে থাকা আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আনা প্রসিকিউশনে সর্বশেষ সাক্ষী মামলার আইওর সাক্ষ্যগ্রহণে আগামী ২৪ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

আসামিদের মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার। আর চারজন দেশে-বিদেশে পলাতক। গ্রেফতার এক আসামি জোবায়ের মনিরসহ তিনজন জামিনে রয়েছেন। আর দুইজন কারাগারে।

রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, মামলায় ১১ আসামির বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আনা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) জমা দেন। পরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এখন পর্যন্ত ১২জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন আদালত। এর মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, ২০১৬ সালে ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে জোবায়ের মনির, তার ভাই প্রদীপ মনির ও চাচা মুকিত মনিরসহ সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।

ওই বছরের ২১ মার্চ অভিযোগের তদন্ত শুরু করে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

সুনামগঞ্জের পেরুয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রজনী দাসের দায়ের করা মামলায় ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জোবায়ের মনির, জাকির হোসেন, তোতা মিয়া টেইলার, সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুল জলিল, আব্দুর রশিদসহ অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ দায়েরের পরই আমেরিকায় পালিয়ে যায় অভিযুক্ত মুকিত মনির।

২০১৯ সালের ১৭ জুন তদন্ত সংস্থা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জোবায়ের মনিরসহ ১১ জন জড়িত বলে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদালতকে অসুস্থতার তথ্য দিয়ে জোবায়ের মনির জামিন মঞ্জুর করিয়ে নেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূর হোসেন জানান, অপরাধী হিসেবে জোবায়ের মনিরসহ ১১ জনের অপরাধের অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছি। এরমধ্যে ছয়জন গ্রেফতার হয়েছে। জোবায়ের মনির অসুস্থতার কথা বলে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বরে হাওরাঞ্চলের শীর্ষ দালাল আব্দুল খালেকের নির্দেশে পেরুয়া, উজানগাঁও, শ্যামারচরে ভয়াবহ গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। শ্যামারচর বাজারের স্কুলের সামনে ২৭ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে লাইন ধরিয়ে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। পরে কয়েকটি পল্লীতে প্রায় তিন শতাধিক প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী দিয়ে নারীদের ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে।

ওই গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয় দালাল আব্দুল খালেকের ভাই মুকিত মনির, কদর আলী, ছেলে প্রদীপ মনির, জোবায়ের মনিরসহ প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী। ১৯৭২ সালে কদর আলীকে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয়।

এফএইচ/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।