খতনা করতে গিয়ে মৃত্যু: ২ চিকিৎসককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ইনসেটে ভুক্তভোগী আহনাফ তাহমিদ

রাজধানীর মালিবাগে জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার দুই চিকিৎসককে দুইদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গ্রেফতাররা হলেন- জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির ও মাহাবুব মোরশেদ।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক রুহুল আমিন তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অপরদিকে রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন আসামিদের আইনজীবী। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী তাদের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে দুইদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করতে গিয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুর নাম আহনাফ তাহমিদ (১০)। সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো।

এ ঘটনায় শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু, জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আহনাফ তামহিদকে সুন্নতে খাতনা করানোর জন্য তার বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানার জেএস হাসপাতালের চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওইসময় কিছু টেস্ট লিখে দেন। ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। সুন্নতে খতনা করতে কোনো সমস্যা নেই। পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টায় ছেলের সুন্নতে খতনা করানোর জন্য স্ত্রী খায়রুন নাহারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। পরে ছেলেকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়। আসামিরা জানান তাদের ২০/২৫ মিনিট সময় লাগবে। তখন আহনাফের পিতা-মাতা বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। ৩০/৩৫ মিনিট পর ওটি রুমের দরজায় নক করলে তারা জানান আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা পার হওয়ার পর আহনাফের পিতা ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করে আরও কিছুসময় অপেক্ষা করতে বলা হয়।

পরবর্তীতে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করেন। সেখানে দেখতে পান, তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তার বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় দেখেন। তখন চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। ছেলের এই অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তারা কর্ণপাত না করে নিজেরাই তার বুকে চাপাচাপি, হাত-পা মালিশ করতে থাকেন। তখন জোর করে তাকে ওটি রুম থেকে বের করে দেন তারা। দুই ঘণ্টা পার হলেও তারা ছেলের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এরপর জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে ফখরুল জানতে পারেন তার ছেলে আহনাফ তামহিদ মারা গেছে।

জেএ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।