বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম

সংবাদে শিশুদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ নয়

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শিশুদের নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে পরিচয় প্রকাশ না করা হয়। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আদালত সাংবাদিকতা শীর্ষক এক কর্মশালায় আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এমন মন্তব্য করেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সিরাজুল হক হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)।

ফোরামের সভাপতি শামীমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। এ সময় সাংবাদিকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

কিশোর গ্যাং একটি সামাজিক সমস্যা উল্লেখ করে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস’ এর সভাপতি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা গ্রেফতার হচ্ছে, আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং আসলেই একটা সমস্যা। কিশোর গ্যাং কেন হয় কি কারণে হয় সমাজ বিজ্ঞানীরা আছেন তারা ভালেভাবে দেখতে পারবেন কীভাবে প্রিভেন্ট করা যায়। কিন্তু আইন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টিকোণ থেকে মনে করা হচ্ছে এ ধরনের কিশোর গ্যাংদের গ্রেফতার করা প্রয়োজন। মানুষ কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় ভীষণ অতিষ্ঠ। আমি যখন বিভিন্ন জায়গায় যাই আমাদেরকে বলে এই কিশোর গ্যাং আসলে কেউ কিশোর না। হতে পারে সবাই কিশোর না, ১৫/১৬ বছর বয়স। আমাদের শিশু আইনে ১৮ বছর।

তিনি আরও বলেন, শিশু আইন ও হাইকোর্টের রায়ে বলা আছে, শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পরিচয় যাতে প্রকাশ না করা হয়। কিন্তু আমি কয়েকদিন ধরে দেখছি আইন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর মধ্যে প্রবণতা আছে কে কতটুকু কাজ করছে তা তুলে ধরার। তারা হয়তো ডাকলো, ডেকে মিডিয়ায় ব্রিফ করলো। প্রাথমিকভাবে ধরে নিতে হবে এরা কিশোর। কারো যদি বয়স কম বেশি হয় সে বিষয়ে প্রশ্ন আসলে সেটা আদালত নির্ধারণ করবে।

বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম আরও বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের গ্রেফতার হওয়া বা ধরা আইনগত বাধা নেই। এটা করতেই পারে। কিন্তু এদের ছবি দেওয়া মিডিয়ায়, পত্রিকায় সেভাবে পরিচয় প্রকাশ করা, এটা কিন্তু আইনে বারণ করছে। এখন আপনাকে (সাংবাদিকদের) ডেকে ব্রিফ করলো। করলেই কি আপনি ছবিসহ নাম প্রকাশ করে দেবেন? সে ক্ষেত্রে আপনি সংযত হয়ে আইনটা মেনে সংবাদ পরিবেশন করবেন, ছবি যাতে প্রকাশিত না হয়।

আদালত সাংবাদিকতার বিষয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, যতটুকু সত্য ততটুকু আপনি (সাংবাদিক) করবেন। ততটুকু দেবেন যতটুকু আপনি প্রমাণ করতে পারবেন। যদি আপনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়, অবশ্যই ডিফেন্ড করবেন। আমি মনে করি এ ধরনের সাহসী সাংবাদিকতা অবশ্যই থাকা দরকার। কারণ আমরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিচারক হই, যেই হই। আমাদের জবাবদিহীতা আছে জনগণের কাছে, আইনের কাছে, সংবিধানের কাছে। তবে সাবধানতার সঙ্গে করতে হবে, যাতে বিচারকের মানহানি না হয়।

এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।