বিচারপতি বোরহান উদ্দিন
সুপ্রিম কোর্টকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হতে হবে
![সুপ্রিম কোর্টকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হতে হবে](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/high-courty-20240227161111.jpg)
সুপ্রিম কোর্টকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। প্রায় ১৬ বছরের বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবসে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এমন মন্তব্য করেন তিনি।
এ দিন দুপুর ১২টায় আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বিদায়ী সংবর্ধনা দেন। এসময় তিনি বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগ একে অন্যের পরিপূরক হলেও বিচার বিভাগের দায়িত্ব সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে অনন্য। কারণ আইনসভায় প্রণীত কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্য কি না তা দেখার অধিকার বিচার বিভাগের। পাশাপাশি নির্বাহী বিভাগের কোনো কার্যকলাপ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না তা দেখার ক্ষমতা বিচার বিভাগের এবং এ কারণেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
আইনের শাসন সম্পর্কে বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, সুশাসন এবং আইনের শাসন সমার্থক। সুশাসন তথা আইনের শাসন নিশ্চিত করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। একই সঙ্গে এ কথাও অত্যন্ত ঠিক যে, বিচারিক স্বাধীনতা অনেকাংশে নিশ্চিত করে বিচারকের অন্তরের স্বাধীনতা। স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পালনের জন্য বিচারককে মন এবং মননে স্বাধীন হতে হবে এবং এ কারণে বিচারককে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার এ ছোট দেশটাকে আমি বড় ভালবাসি। এ দেশের খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলি আমারই স্বজন। তাদের প্রত্যেকের জীবনে সুখ আসুক, স্বাচ্ছন্দ আসুক। এ দেশের প্রতিটি ছেলে-মেয়ে শিক্ষার আলো পাক, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠুক, জ্ঞান বিজ্ঞানে আলোকিত মানুষ হোক-এ আমার সারা জীবনের চাওয়া। দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিলে খেটে খাওয়া মানুষ বাঁচার পথ করে নিতে পারে।
বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ১৯৫৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের ৩ মার্চ অধস্তন আদালত, ১৯৮৮ সালের ১৬ জুন হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০২ সালের ২৭ নভেম্বর আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর বিচারপতি বোরহান উদ্দিন হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি বিচারপতি বোরহান উদ্দিনকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম