২০২৩-২৪ সালের অগ্নিকাণ্ড ও জানমালের ক্ষতির তথ্য চান হাইকোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ০৪ মার্চ ২০২৪
ফাইল ছবি

২০২৩-২৪ সালে রাজধানীর সুউচ্চ ভবনগুলোতে কতগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং তাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত তানজিনা নওরীনের বড় ভাইয়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। এ সময় তাদের সহযোগিতা করেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান ও মোহাম্মদ নাজমুল করিম। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া আরজু।

জনস্বার্থে ব্লাস্ট, আসক এবং বেইলি রোডে মারা যাওয়া তানজিনা নওরিন এসার বড় ভাই ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুস সাকিব এ রিটে বাদী হয়েছেন। রোববার (৩ মার্চ) দুটি মানবাধিকার সংগঠন ও বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের পুড়ে নিহত এশার বড় ভাইয়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ নাজমুল কারিন এ রিট করেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম (জেডআই) খান পান্না ও অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান শাহিন।

এই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়ে বহুতল ভবন, কারখানা ও স্থাপনায় গত বছর ও চলতি বছর আগুনের ঘটনায় জীবন-সম্পত্তির ক্ষতি ও নেওয়া ব্যবস্থাসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। রুলে বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

বহুতল ভবন, কারখানা ও স্থাপনায় গত বছর ও চলতি বছর সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কতজন নিহত হয়েছেন, জীবন–সম্পত্তির কেমন ক্ষয়ক্ষতি ও কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—এসব তথ্য জানিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

শুনানিতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, জাতীয় বিল্ডিং কোড ও অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনের বিধান মানা হচ্ছে না। নিষ্ক্রিয়তা দেখা যায়। এখন সবাই জানতে পারছি যে ওই ভবনটিতে এক্সিট (বেরোনোর পথ) ছিল না। একপর্যায়ে আদালত বলেন, পত্রপত্রিকায়ও সেভাবে এসেছে—যখন কোনো ঘটনা ঘটে যায়, তখন আমরা সজাগ হই।

ফায়ার সার্ভিসের বার্ষিক প্রতিবেদন (২০২২–২৩) থেকে তুলে ধরে আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, এতে দেখা যায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ জীবন হারিয়েছেন। মাত্র এক বছরে ২৯ হাজার ৫৭০টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

রিটের পক্ষে আইনজীবী অনীক আর হক শুনানিতে বলেন, অগ্নির্বাপণ আইন অনুসারে ছয়তলার ওপরে হলে বহুতলবিশিষ্ট ভবন। জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসারে দশতলা হলে বহুতল ভবন। যদি কেউ ছয়তলার জন্য রাজউকের কাছ থেকে অনুমতি নেন, তিনি অগ্নিনির্বাপণ আইনে তখন আবেদন করেন না। বেইলি রোডের ওই ভবনটির বাণিজ্যিক ও আবাসিকের জন্য অনুমতি নেয়। তিনতলা পর্যন্ত থাকবে বাণিজ্যিক, এর ওপরে থাকবে আবাসিক। অথচ তা মানা হয়নি।

এফএইচ/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।