অগ্নি প্রতিরোধ আইন ও বিধিমালা মানানো যায় না, দুঃখজনক: হাইকোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:২৯ পিএম, ০৪ মার্চ ২০২৪

অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ও বিধিমালা থাকলেও অনেকে তা জানেন না, আবার জানলেও তা মানানো যায় না, যা দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে দায়ের রিটে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার ও সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

রাজধানীর বেইলি রোডে সব আবাসিক স্থাপনায় রেস্টুরেন্ট বন্ধ ও ঘটনা অনুসন্ধানে বিচারিক কমিটি চেয়ে দায়ের করা পৃথক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মন্তব্য করে রুল জারি ও আদেশ দেন।

আদালতে এরদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ও আইনজীবী ইসরাত জাহান শান্তনা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

এর আগে রোববার (৩ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসরাত জাহান সান্ত্বনা ও মো. ইউনুছ আলী আকন্দ রিটটি করেন।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে আইনের বিধিবিধান মেনে অগ্নিনির্বাপণের জন্য রাজধানীর ভবন ও স্থাপনাগুলোতে কী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চিহ্নিত করা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দৃশ্যমান স্থানে নোটিশ টানানোর জন্য ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুনানিতে আদালত বলেন, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন আছে। আছে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ বিধিমালা। তবে আইন ও বিধিমালা থাকলেও অনেকে তা জানেন না। আবার জানলেও তা মানানোও যায় না, যা দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ এক রিট করেন। ভবনটিতে আগুন লাগার কারণ উদঘাটন, সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও জরুরি বেরোনোর পথ ছিল কি না-এসব তদন্তে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে কমিটি গঠন ও প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে একই দিন অপর রিটটি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান। দুটি রিটের ওপর আজ প্রথমার্ধে একসঙ্গে শুনানি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত সাংবাদিকদের জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুজন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, রাজউক চেয়ারম্যান ও বুয়েটের একজন করে প্রতিনিধি কমিটিতে থাকবেন বলে হাইকোর্টের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘অগ্নি প্রতিরোধে স্থাপনাগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়-এসব বিষয়ে এ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত। কমিটিকে চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ যেসব ভবনকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দৃশ্যমান স্থানে নোটিশ টানানোর জন্য ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এফএইচ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।