কেরানীগঞ্জে রাসেল হত্যা
‘আব্বা বাহিনীর’ আফতাবকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের আলোচিত সাইফুল ইসলাম রাসেল হত্যা মামলার আসামি ‘আব্বা বাহিনী’র আফতাব উদ্দিন রাব্বির জামিন স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আফতাবকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২১ এপ্রিল) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে আইনজীবী ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
গত ২১ মার্চ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন আফতাব। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি নিয়ে এই আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
গত ১৭ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আফতাবসহ ১২ জনের গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।
গ্রেফতার বাকি ১১ জন হলেন আলমগীর হোসেন ওরফে ঠান্ডু (৩৯), মো. আমির হোসেন (৩৮), মো. রনি (৩৫), মো. শিপন (৩১), মো. রতন শেখ (২৮), অনিক হাসান হিরা (৩০), রাজিব আহমেদ (৩৫), মো. সজিব (৩৬), ফিরোজ (৩১), মো. মাহফুজুর রহমান (৩৬) ও দেলোয়ার হোসেন দেলু (৩৭)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, গত ১০ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাট পারভিন টাওয়ারের নিচে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে রাসেল নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। পরে আফতাব ও তার লোকজন আত্মগোপন করেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে নিহত রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নামে থানায় মামলা করেন। এর পর পুলিশ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ছয় সহযোগীসহ মামলার প্রধান আসামি আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাবকে গ্রেফতার করে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান, রাসেল ও আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাব উদ্দিন রাব্বি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে আফতাবের অফিসে ডেকে নিয়ে আফতাব ও তার সহযোগীরা রাসেলের ওপর রাতভর নির্যাতন চালান। পরদিন সকালে স্বজনরা রাসেলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর আফতাবের অফিসে রাসেলকে নির্যাতনের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এফএইচ/জেএইচ/এমএস