বেনজীরের দুর্নীতির প্রতিবেদন অনুসন্ধান চেয়ে রিট শুনানি দুপুরে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫৮ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে শুনানির জন্য দুপুর ২টার সময় ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী এবাদাত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হবে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। এছাড়া রিট আবেদনে বেনজীর আহমেদকে বিবাদী করা হয়েছে।

এদিকে, বেনজীর আহমেদের পক্ষে মামলায় লড়তে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছেন অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা।

এর আগে বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। ওই রিটে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে এক দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে দুদক চেয়ারম্যান, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান আবেদনকারী হিসেবে রোববার (২১ এপ্রিল) এ রিট দায়ের করেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) আইনজীবী নিজেই জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত ওই সংবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে গত ৪ এপ্রিল দুদকে আবেদন করা হয়। এতে ফল না পেয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ১৮ এপ্রিল দুদক বরাবর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এর পর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বলছি না বেনজীর আহমেদ অবৈধভাবে বা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন বা করেননি। তবে প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধান হওয়া উচিত। কারণ, প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জনগণ মনে করে পুলিশের সাবেক আইজিপি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে। আইন দুদককে স্বেচ্ছায় অনুসন্ধানের ক্ষমতা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, তারা রিটের একটি কপি হাতে পেয়েছেন। সেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এর আগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।

জাতীয় ওই দৈনিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বেনজীর আহমেদের নানান অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ, গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।