অর্থপাচার

ফরিদপুরের সাবেক পৌর মেয়র মাহতাব কারাগারে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ১৩ মে ২০২৪

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুরের সাবেক পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলায় গত মঙ্গলবার (৭ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আসামি অমিতাভ বোস, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মো. নাছিম ও শামসুল আলম চৌধুরী আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ওইদিন শুনানি শেষে অমিতাভ ও নাছিমের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। অন্যদিকে শামসুল আলম চৌধুরীর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২২ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন মামলার আসামি ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। এছাড়া ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে পলাতক থাকায় ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোসসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

এ মামলায় জামিনে রয়েছেন খন্দকার লেভী, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন, খন্দকার মোহাতেশাম বাবর, আসিবুর রহমান ফারহান, কামরুল হাসান ডেভিড, আরিফুর রহমান দোলন ও তারিকুল ইসলাম নাসিম। এছাড়া জেলহাজতে রয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ও এ এইচ এম ফুয়াদ। বাকি ৩৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২২ জুন চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে আদালত মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলাটিতে কিছু অসঙ্গতি দেখতে পাওয়ায় আদালত সুয়ো মোটোভাবে (স্বতঃপ্রণোদিত) সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আপন ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জী, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।

সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন- নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেশ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জী, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাব বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুণম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু, স্বপন কুমার পাল, অ্যাডভোকেট জাহিদ বেপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হন বরকত ও রুবেল। এছাড়া তারা মাদক কারবার এবং ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন। এসি ও নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ডাম্পট্রাক, বোল্ডার ও পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। সেই সঙ্গে দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন তারা।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রথম জীবনে দুই ভাই রাজবাড়ীর এক বিএনপি নেতার সঙ্গী ছিলেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে কিছুই ছিল না। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর ওই এলাকায় এক আইনজীবী খুন হন। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বরকত ও রুবেল।

জেএ/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।