আপিল বিভাগের রায়
পাওনা আদায়ে উপযুক্ত আদালতে যেতে পারবেন ইউনিপের গ্রাহকরা
ব্র্যাক ব্যাংকের রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড শাখায় জমা থাকা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি (এমএলএম) ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকদের ৪২০ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ টাকা ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকরা সরকারের কাছে আবেদন করে নিতে পারবেন বলেও আদেশে বলা হয়েছিল।
ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকদের ৪২০ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে ঘোষিত রায়টির পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রায়ে বলা হয়েছে, আদালত কর্তৃক সরকারের কোষাগারে স্থানান্তর করা এই অর্থ/সম্পত্তির প্রতি যদি কারও দাবি বা আগ্রহ থাকে, তাহলে তারা (গ্রাহকরা) প্রতিকারের জন্য উপযুক্ত আদালতে যেতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা পাওনা আদায়ের জন্য হাইকোর্ট ডিভিশনের কাছে যেতে পারবেন। কারণ রায়ে দেনাদারদের ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এখন হাইকোর্ট বিভাগ আইন অনুযায়ী বিষয়টি নিষ্পত্তির এখতিয়ার পেয়েছেন।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ক্ষেত্রে, এটি স্বীকার করা হয় যে দুর্নীতি দমন কমিশন আজ পর্যন্ত আইন অনুসারে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির একটিও বাজেয়াপ্ত করেনি। রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই রায় প্রাপ্তির তারিখ থেকে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় নোটিশ প্রকাশ করতে এবং বিবাদী, ডিক্রিধারক, বাদী বা অন্য দাবিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম রায়টি লিখেছেন। সম্প্রতি ১২ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
রায়ের বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী রাফসান আলভী বলেন, আপিল বিভাগের এই রায় ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকদের পাশাপাশি ডেসটিনি, ইভ্যালির মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা আদায়ে গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন
গ্রাহকদের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক এ বিষয়ে বলেন, আপিল বিভাগে ইউনিপে টু ইউ’র মামলার শুনানি হয়েছে। ব্রাক ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখায় যে ৪২০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে, আপিল বিভাগ সেটিকে সরকারি কোষাগারে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা বলা আছে, সেটাও দেবে। এরপর ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহক যারা আছেন তারা ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করবেন। তারপর তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে তারা সিদ্ধান্ত দেবেন।
এই রায়ের ফলে গ্রাহকদের টাকা পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ আদালতে বলেছি, আমরা ডিক্রি পেয়েছি। তারপর এটিতে ক্রিমিনাল একটা মামলা হয়ে ক্রোক করার অর্ডার দিয়েছিল। কিন্তু অদ্যবধি দুদক বা সরকার এটাকে ক্রোক করেনি।
গ্রাহকেরা টাকা কীভাবে ফেরত পাবেন তার জবাবে অনিক আর হক বলেন, টাকাগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যাওয়ার পর নির্দিষ্টভাবে আবেদন করতে হবে।
এফএইচ/এমএইচআর/এএসএম