প্রযোজক রাজের মামলা

জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও আদালতে আসেনি সাক্ষীরা

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৯ পিএম, ২৩ মে ২০২৪
নজরুল ইসলাম রাজ ও পরীমণিকে আটক করা হয় একই দিনে, ফাইল ছবি

আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় তিন বছর আগে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই সময় তার বাসা থেকে মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানানো হয়। এ ঘটনায় বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন র‌্যাবের কর্মকর্তা মজিবর রহমান। মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। তবে অভিযোগ গঠনের দুই বছর পরও আদালতে কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেনি।

সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর সিপিও (সিম্যান) মো. মজিবর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপরও তারা সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি। দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় মামলার বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাজের আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা।

চিত্রনায়িকা পরীমণির তথ্যের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় রাজের বাসা থেকে মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে র‌্যাবের মজিবর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এছাড়া পর্নোগ্রাফি আইনেও একটি মামলা করা হয়। দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে ছিলেন রাজ।

জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও আদালতে আসেনি সাক্ষীরা
প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজ, ফাইল ছবি

২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নজরুল ইসলাম রাজসহ দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন। ২০২২ সালের ৩১ মার্চ রাজসহ দুজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) ২৪ (খ), ১০(ক)/৪১ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালত। অভিযোগ গঠনের পর মামলার বাদী মজিবরসহ তিনজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন দেন আদালত। সমন দেওয়ার পরও আট ধার্য তারিখে তারা সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়ায় জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করেন আদালত। জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য দিতে দুই বছরের মধ্যে আদালতে উপস্থিত হননি।

আদালতের তথ্যমতে, সর্বশেষ ১১ মার্চ ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামি রাজ ও সবুজ আলী আদালতে হাজিরা দেন। কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। রাষ্ট্রপক্ষ হাজিরা প্রদান করে। আগামী ৪ জুন হাজির হতে মামলার বাদী মজিবর রহমান, জব্দ তালিকার সাক্ষী আল আমিন ও জুয়েল শেখের প্রতি জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেন আদালত।

অভিযোগ গঠনের পর মামলার বাদী মজিবরসহ তিনজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন দেন আদালত। সমন দেওয়ার পরও আট ধার্য তারিখে তারা সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়ায় জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করেন আদালত। জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য দিতে দুই বছরের মধ্যে আদালতে উপস্থিত হননি।

ইয়াবা ও মদের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষায় প্রমাণিত

অভিযোগ গঠনের আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, ‘জব্দ করা ইয়াবা ট্যাবলেট ও মদের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষকের রিপোর্টে ‘অ্যামফেটামিন ও অ্যালকোহল’ প্রমাণিত হয়েছে। এতে, আপনারা ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর টেবিল ২৪ (খ) এবং উক্ত আইনের টেবিল ১০ (ক)/৪১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। বর্ণিত অভিযোগে এ আদালতে আপনাদের বিচার অনুষ্ঠিত হবে।’

এসময় কাঠগড়ায় উপস্থিত আসামি মো. নজরুল ইসলাম রাজ ও মো. সবুজ আলীকে আদেশটি পাঠ ও ব্যাখ্যা করে বোঝানো ও শোনানো হলে, তারা নিজকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।

জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও আদালতে আসেনি সাক্ষীরা
রাজের বাসা থেকে উদ্ধার মাদক, ফাইল ছবি

মাদক কারবারে দুটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন প্রযোজক রাজ

২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজসহ দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন ।

রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) এর ২৪(খ)/১০(ক)/৩৮ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে মাদক কারবারের কাজে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করায় সবুজ আলীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১) এর ২৪ (খ)/১০ (ক)/৩৮/৪১ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

অভিযোগপত্রে রাজের সহযোগী সবুজ আলীকেও আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে ঝন্টু মিয়ার পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে আপাতত মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ১৮ জনকে। সবুজ আলী মূলত রাজের অফিসের সহায়ক (পিয়ন) ছিলেন।

অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, রাজ সরকারি বাংলা কলেজ থেকে ১৯৯৩ সালে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি শুরু করেন স্টক লটের ব্যবসা। পরবর্তীসময়ে ওয়াসার ঠিকাদার হিসেবেও কাজ করেন। ২০১৪ সাল থেকে নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে বিনিয়োগ করা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীসময়ে ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এসময় তিনি বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে মাদকসেবন ও বেচাকেনা করতেন। মাদক কারবারের কাজে তার নিজস্ব দুটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন।

বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ মজুত করেছিলেন রাজ

২০২১ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে চিত্রনায়িকা পরীমণির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে সেদিন রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র‌্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করার কথা জানায় র‌্যাব।

জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও আদালতে আসেনি সাক্ষীরা
নজরুল ইসলাম রাজের বাসার ভেতরের দৃশ্য, ফাইল ছবি

একই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় অভিযান শুরু করে র‌্যাব। পরীমণিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে রাজকে আটক করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। রাজের বাসা থেকেও মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

এরপর ৫ আগস্ট পরীমণির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে র‌্যাব বাদী হয়ে মামলা করে। আর রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা করে র‌্যাব। রাজের বিরুদ্ধে মাদক মামলার বাদী হলেন র‌্যাব-১ এর সিপিও (সিম্যান) মো. মজিবর রহমান।

প্রযোজক রাজের মাদক মামলায় ২০২২ সালের ১১ মার্চ অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজির হন না। সাক্ষী হাজির না হওয়ায় মামলাটির ধীরগতি। আমরা চাই, সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসুক। ন্যায়-অন্যায় রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে।—রাজের আইনজীবী মামুন উর রশীদ

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী মো. মজিবর রহমান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, পরীমণি বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ সংগ্রহ করে মজুত করে রেখেছেন এবং তিনি তার বাসায় অবস্থান করছেন। তাৎক্ষণিক মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও আসামিকে গ্রেফতারের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায় র‌্যাব। অভিযুক্ত পরীমণি ও তার সহযোগী মো. আশরাফুল ইসলাম দিপুকে আটক করে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮-এর বিভিন্ন ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করার জন্য এজাহার দাখিল করা হয়েছে।

রাজের কাছ থেকে প্রায়ই বিদেশি মদ সংগ্রহ করতেন পরীমণি

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, এসময় আসামি পরীমণিকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, রাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম ওরফে রাজের (৪৮) কাছ থেকে প্রায়ই পরীমণি বিদেশি মদ সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে জব্দ করা আলামত ও আসামিদের নিয়ে রাজের ভাড়া করা অফিসে পৌঁছায় র‌্যাব। এরপর অফিসটিতে অভিযান চালিয়ে ৯৭০ পিস গোলাপি রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এছাড়া সেখানকার রান্নাঘর থেকে আনুমানিক ১ লাখ ১৭ হাজার টাকার মদ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। তারা হলেন- মো. নজরুল ইসলাম রাজ (৪৮), মো. সবুজ আলী (৩৪) ও ঝন্টু মিয়া। এরমধ্যে রাজ ও সবুজ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হন।

অভিযোগ প্রমাণ হলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

প্রযোজক রাজসহ দুজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ২৪ (খ), ১০ (ক)/৪১ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালত। তাদের বিরুদ্ধে যেসব ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ২৪ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ১০ কেজি অথবা লিটার-এর ঊর্ধ্বে এবং অনূর্ধ্ব ১০০ কেজি অথবা লিটার হইলে অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর অনূর্ধ্ব ৫ বৎসর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও আদালতে আসেনি সাক্ষীরা
রাজের বাসা থেকে উদ্ধার আলামত, ফাইল ছবি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর টেবিলের ১০ (ক) ধারায়- মাদকদ্রব্যের পরিমাণ অনূর্ধ্ব ২০০ গ্রাম অথবা মিলি লিটার হলে অন্যূন ১ বৎসর, অনূর্ধ্ব ৫ বৎসর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু জাগো নিউজকে বলেন, প্রযোজক রাজের বিরুদ্ধে মাদক মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হয়ছে। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রযোজক রাজের আইনজীবী মামুন উর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রযোজক রাজের মাদক মামলায় ২০২২ সালের ১১ মার্চ অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজির হন না। সাক্ষী হাজির না হওয়ায় মামলাটির ধীরগতি। আমরা চাই, সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসুন। ন্যায়-অন্যায় রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে।

জেএ/এমএইচআর/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।