বিইউপি শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি

শান্ত-মারিয়ামের শিক্ষক রশি কামালের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ৭ জুলাই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ২৬ মে ২০২৪
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) এক শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে করা মামলায় শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক রশি কামালের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

রোববার (২৬ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন রশি কামালকে জেলহাজত থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য বিচারক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ জুলাই নতুন দিন ধার্য করেন।

পল্লবী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই সেলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চারদিনের রিমান্ড শেষে ২২ এপ্রিল আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

অনলাইনে উত্ত্যক্ত ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে শান্ত-মারিয়ামের শিক্ষক রশি কামালের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী থানায় গত ১৮ এপ্রিল মামলা করেন বিইউপির ভুক্তভোগী শিক্ষিকা।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তার একটি গবেষণা ইন্দোনেশিয়ান জার্নাল অব সোশ্যাল রিসার্চ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়। গত ১৭ মার্চ বর্তমান বাসায় অবস্থানকালে তার ব্যক্তিগত ই-মেইলে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটি চেয়ে আসামি রশি কামাল নিজের ই-মেইল থেকে অনুরোধ করেন। তিনি শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন বলে পরিচয় দেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গবেষণাপত্রটি তার ই-মেইলে পাঠিয়ে দেন। গবেষণাপত্রটি আসামি পড়েন এবং খুব প্রশংসাও করেন। একটি কনফারেন্সে প্রকাশের জন্য ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর সিভি চাইলে আসামিকে সেটিও দেন বাদী।

পরে বাদী আসামির রিসার্চ গেটের লিংক চাইলে তিনি তার ই-মেইল থেকে বাদীর ই-মেইলে সেটি পাঠান। আসামির গবেষণাপত্রগুলো পড়ে বাদী বুঝতে পারেন, আসামির গবেষণাগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত, যা বাদীর গবেষণার বিষয় থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ কারণে বাদী তার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তবুও আসামি বাদীর সঙ্গে স্কাইপিতে ভিডিও কলে কথা বলতে বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু বাদী ভিডিও কলে কথা বলতে রাজি হননি।

এরপর গত ২৯ মার্চ দিনগত রাত ১টা ৪ মিনিটে আসামি বাদীকে ফোনকল করেন এবং যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলে ফোন রেখে দেন। বাদীর হোয়াটসঅ্যাপসহ তার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে নিজেকে রশি কামাল পরিচয় দিয়ে আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেন আসামি। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ মার্চ রাত আনুমানিক ১টা ৪ মিনিট থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আসামির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বাদীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে অশ্লীল ও যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলে বাদীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়।

এসময় হোয়াটসঅ্যাপে পর্নো ছবি পাঠান আসামি। বাদী এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে আসামি তাকে গালাগাল করেন এবং নোংরা ছবি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে বাদীর মানসম্মান ও সামাজিক মর্যাদা হানি করার হুমকিও দেন।

মামলার এজহারে রশি কামালকে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষক উল্লেখ করা হলেও শান্ত-মারিয়াম কর্তৃপক্ষ দাবী করেন, আসামি অনেক আগে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি শান্ত-মারিয়ামের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত নেই।

জেএ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।