চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরীর পদ ও বেতন-ভাতা ফেরতের আদেশে স্থিতাবস্থা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২০ পিএম, ২৬ মে ২০২৪

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরীর পদ ও চেয়ারম্যান হিসেবে নেওয়া সব বেতন-ভাতা ফেরতের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে রায় পাওয়ার ৩ মাসের মধ্যে চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরীর সব বেতন-ভাতা ফেরত দিতে হবে না বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী ওয়াজি উল্ল্যাহ্।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে সোহেলে চৌধুরীর করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২৬মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন সোহেল চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অ্যাডভোকট শ. ম রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট শাহ মুঞ্জুরুল হক, অ্যাডভোকেট ওয়াজি উল্ল্যাহ্। তাদের সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আজিম উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মোতালেব, ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মঈনুল হাসান।

এর আগে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরীর পদ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান হিসেবে নেওয়া সব বেতন-ভাতা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায় পাওয়ার ৩ মাসের মধ্যে সব বেতন-ভাতা ফেরত দেওয়ার কথাও বলা হয়।

আরও পড়ুন

২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে বেতন-ভাতা ও যানবাহন সুবিধা হিসেবে গ্রহণ করার কথা ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৬১৯ টাকা। রায়ে ওই সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হালিমের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। অপর প্রার্থী এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

গত ১৬ মে হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। পাঁচ বছর আগে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এ রায় দিলেন আদালত।

আদালতে এদিন আবেদনকারী আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন। সোহেল চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

আইনজীবীরা জানান, ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ফেনীর ছাগলনাইয়ার মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যত বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন তা তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৯ সালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়। এর ফলে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর মধ্যে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন প্রার্থিতা বাতিল হওয়া দুই প্রার্থী। একই সঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোহেলকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ২০১৯ সালেই হাইকোর্ট এসব বিষয়ে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যানের গেজেট স্থগিত করেন। পরে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। তবে আইনি জটিলতায় মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। শপথ না নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

তিনি বলেন, আদালত ৫ বছর আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে যে বেতন-ভাতা ও সুবিধা নিয়েছেন তা রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে বলেছেন।

আমরা আদালতে জানিয়েছি তিনি এ সময়ে ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৬১৯ টাকা বেতন-ভাতা ও যানবাহন সুবিধা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এ সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে ফেনীর জেলা প্রশাসককে তার থেকে আদায় করতে বলেছেন আদালত, যোগ করেন কাজী মাঈনুল হাসান।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।