ভালুকায় দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু

গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ হাইকোর্টের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ২৭ মে ২০২৪
সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শিশু

ময়মনসিংহের ভালুকায় গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গাড়ি ও আসামিকে গ্রেফতার না করায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী ৩ জুন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এ সময়ের মধ্যে গাড়ি ও আসামিকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের আদালতে এসে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আহত শিশুর উন্নত চিকিৎসা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (২৭ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আর্জির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ( ডিএজি) ইয়াসমিন বেগম বিথী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল (এএজি) মুজিবুর রহমান।

অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে স্কয়ার মাস্টারবাড়ি আইডিয়াল মোড় শশী ইলেকট্রনিকের সামনে দুর্ঘটনায় জায়েদা আক্তার মারা যান। গত ১০ মে রাত ১টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে এবং সকালে হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত জায়েদের সঙ্গে থাকা তার এক বছরের ছেলেও আহত হয় এবং চিকিৎসাধীন ছিল।

তিনি বলেন, আজ শুনানির নির্ধারিত দিনে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম, ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল ও তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

শুনানিতে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ১০ মে ঘটনা ঘটলেও সাথে সাথে মামলা না করে দুদিন পর এফআইআর দায়ের করা হয়। এজাহারে ভিকটিমের ঠিকানা না পাওয়ার বিষয়ে বলা হলেও ১১ মে সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) ভিকটিমের লাশ শনাক্তের বিষয়ে তার ভাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে সিআরভি গাড়ির যে সন্ধানের কথা বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যমে দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব কিন্তু পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এক্ষেত্রে তা বিবেচনায় না নিয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং এ বিষয়ে যে অঙ্গীকারনামা সম্পাদন করেছে তা আদালতের কার্যক্রমের হস্তক্ষেপ এবং আদালত অবমাননা শামিল।

শুনানি শেষে আদালত দুর্ঘটনায় জড়িত গাড়ি ও আসামিকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আদালত বিভিন্ন বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন-

১. আগামী ৩ জুন সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আদালতকে অবহিত করা এবং এ সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং আসামিকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট সকলকে আদালতে এসে জবাবদিহি করতে হবে।

২. বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানকে দুর্ঘটনার গাড়ি শনাক্তে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৩. সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে আদালতকে অবহিত না করে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তাতে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা উচিত কিন্তু আদালতে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করায় আদালত তা মঞ্জুর করে তাকে সতর্ক করেছেন।

৪. শিশুটির নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে সময় সময়ে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আদালতকে অবহিত করার বিষয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

এফএইচ/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।