আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

স্রোতের বিপরীতে কিছু করা যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র উৎকৃষ্ট উদাহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদযাপিত হয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছর পূর্তি। ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পথচলা শুরু হয়। ‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগানে পথচলা শুরু করা সেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সম্প্রতি তার প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পূর্ণ করেছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে দিনব্যাপী বর্ষপূর্তি উৎসবের আয়োজন করা হয়। দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব, কেন্দ্রের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন কর্মসূচির শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইন্দিরা রোডের একটি ছোট্ট বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আজ জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা অব্যাহত রাখার জন্য সবার সমর্থন প্রত্যাশা করেন।

শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আলোকিত মানুষ গড়ার অগ্রসেনানী। স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ দেখার ক্ষমতা তার আছে। এজন্য তাকে অভিনন্দন। তার প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আজ দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে জাগ্রত করছে। এ প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের তীর্থকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এজন্য শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন সবাইকে অভিনন্দন জানান।

আরও পড়ুন>> বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছরে সুধীজনের মিলনমেলা

ছড়াকার আমীরুল ইসলাম বলেন, আমি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছি। ৪৫ বছর পূর্তির পুরো অনুষ্ঠানটি আমার জন্য এক আনন্দ আয়োজন। একদিকে কেন্দ্রের জন্মদিনের আনন্দ, অন্যদিকে কেন্দ্র এখন বিশাল কলেবরে যাত্রা শুরু করেছে। বিশাল ভবনে কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে। আমি আশাকরি ভবিষ্যতে এখান থেকে আরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে।

দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মেধামননের একটি উৎকৃষ্ট স্থান। ৪৫ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কেন্দ্র তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। দেশের অনেক চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা স্যারের ছাত্র ছিলেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সফলতার সঙ্গে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মানসিক উৎকর্ষতা সাধনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ৪৫ বছরে বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্রোতের বিপরীতে গিয়েও যে কিছু একটা করা যায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। রাস্তায় রাস্তায় বইয়ের লাইব্রেরি ছুটে বেড়ানোর বিষয়টি একসময় অকল্পনীয় ছিল। আমার ধারণা, আরও ৪০ বছর পর সমগ্র দেশে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আলো ছড়িয়ে পড়বে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বিভিন্নভাবে যারা কেন্দ্রকে সহযোগিতা করেছেন তাদের ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।

নাট্যব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সংশ্লিষ্টতা অনেক দিনের। বিগত ৪৫ বছরের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন, স্যারের (আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ) সঙ্গে শুরু থেকেই আছি। ইন্দিরা রোড থেকে শুরু করে বর্তমান নতুন ভবন সবখানেই স্যারকে সঙ্গ দিয়েছি আমরা। একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও সাহস দিয়ে স্যার দেখিয়ে দিয়েছেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকেও বড় কিছু করা যায়।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে সুসজ্জিত শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। বাঙালির শাশ্বত লোকজ ঐতিহ্য শিল্পসামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন অবয়ব তৈরি ও প্রদর্শন করে এবং বর্ণিল পোশাকে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন সবাই। উৎসবে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এনএস/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।